বরিশালবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছে অষ্টম স্প্যান। বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারে বসানো হয়েছে আট নম্বর স্প্যানটি। এর ফলে শুধু জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতু একটানা ১ হাজার ৫০ মিটার পর্যন্ত দৃশ্যমান হলো।
এছাড়া মাওয়া প্রান্তে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি স্প্যান স্থাপন করায় পদ্মা সেতুতে এখন মোট স্প্যানের সংখ্যা দাঁড়ালো আটে। এতে দৃশ্যমান হলো সেতুর ১ হাজার ২০০ মিটার।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে অষ্টম স্প্যানটি নিয়ে জাজিরা প্রান্তে রওনা হয় ভাসমান ক্রেনটি। বিকালের মধ্যে স্প্যানটি সেখানে পৌঁছায়। আজ সকালে স্প্যানটি বসানোর কথা থাকলেও ঘন কুয়াশার কারণে বসাতে কিছুটা বিলম্ব হয়।
প্রমত্তা পদ্মার দুই পারের সংযোগ ঘটাতে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয় দ্বিতীয় স্প্যান।
২০১৮ সালের ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান। ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর খুঁটির ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হয়। ২৯ জুন সেতুর পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায়।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জাজিরা প্রান্তের তীরের দিকের ষষ্ঠ শেষ স্প্যান বসে। এর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর ৯০০ মিটার দৃশ্যমান হয়। আর গত বছরের শেষ দিকে মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটির ওপর একমাত্র স্প্যানটি বসানো হয়।
কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতু হচ্ছে, মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। খুঁটির ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পুরো সেতুতে মোট খুঁটির সংখ্যা হবে ৪২।
একটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব ১৫০ মিটার। ৪২টি খুঁটির ওপর বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। এর মধ্যে আটটি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে সমুদ্রপথে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। ফিটিং করা হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে।’’