ভালোবাসা মানে না কোনো বাধা। প্রেমের শক্তি নিয়ে যুগে যুগে লেখা হয়েছে কাব্য-মহাকাব্য, রয়েছে শত শত প্রবাদ প্রবচন। সে সব মহাকাব্য-প্রবাদ-প্রবচনকে সত্যি করলেন মার্কিন তরুণ ডেন হোয়াইট।
প্রেমের টানে সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে গাজীপুরে ছুটে এসেছেন হোয়াইট। তিনি প্রমাণ করেছেন প্রেমের কাছে সব কিছুই তুচ্ছ। প্রেম মানে না কোন বাধা, কোনো ভোগোলিক সীমারেখা, ধর্ম-বর্ণ কোনো কিছুই।
তাই আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে গাজীপুরে এসে সোজা বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ডেন হোয়াইট। তার প্রেমিকা হলেন গাজীপুরের মির্জাপুরের নয়াপাড়া গ্রামের সোলাইমানের মেয়ে মাসুমা সুলতানা শান্তা। ভালোবেসে শান্তাকে বিয়ে করেছেন হোয়াইট।
প্রেমিকার জন্য বাঙালি রীতি অনুযায়ী ডেন হোয়াইট মুসলমান হয়ে বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে করেছেন। ডেন হোয়াইট নাম বদলে হয়েছেন মোহাম্মদ আলী। বর্তমানে গাজীপুরের মির্জাপুরের নয়াপাড়া গ্রামের মাসুমা সুলতানা শান্তার বাড়িতে অবস্থান করছেন মোহাম্মদ আলী।
এদিকে, সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে একজন সুদর্শন তরুণ গাজীপুরে এসে স্থানীয় এক তরুণীকে বিয়ে করেছেন এ খবরে শান্তার বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক জনতা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুমা সুলতানা শান্তা বলেন, মাত্র দুই মাসের পরিচয় আমাদের। এরই মধ্যে ঘটে যায় অনেক কিছু। মূলত ফেসবুকে একটি বিতর্ক (ডিবেট) গ্রুপের মাধ্যমে ডেন হোয়াইটের সঙ্গে পরিচয় হয় আমার।
এরপর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ হতো আমাদের। কথা হতো ভিডিও কলে। এভাবে কথা বলতে বলতে মনের অজান্তে দু’জন দু’জনকে ভালোবেসে ফেলি। সেই ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ায় পারিবারিক সম্পর্কে।
শান্তা বলেন, ভিডিও কলে আমাদের উভয় পরিবারের সদস্যরাও পরস্পরের সঙ্গে কথা বলেন। উভয় পরিবারের সম্মতিতে আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। বিয়ে করতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করেছি আমি। এক মাস ধরে ভিসা প্রসেসিং করেও কাজ হয়নি। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এসে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ডেন হোয়াইট। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখে ডেন হোয়াইট বাংলাদেশে আসে। ওই দিন ঢাকার হজরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমার সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়। এটিই অামাদের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। ওইদিনই তাকে নিয়ে গাজীপুরে আমাদের বাড়ি আসি। এরপর চলে বিয়ের আয়োজন।
মাসুমা সুলতানা শান্তা আরও বলেন, ডেন হোয়াইট খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। পরে মুসলমান হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে হোয়াইট। সে অনুযায়ী মুসলমান হয়। তার বর্তমান নাম মোহাম্মদ আলী। বাঙালি রীতি মেনে ৩ ফেব্রুয়ারি আমাদের গায়ে হলুদ এবং আংটি বদলসহ বিয়ের নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। মোহাম্মদ আলী বর্তমানে আমাদের বাড়িতে। আমরা ভালো আছি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে গত বছরের এপ্রিলে প্রেমের টানে ব্রাজিল থেকে এক তরুণী রাজবাড়ীতে আসেন। ওই বছরের আগস্টে মালয়েশিয়া থেকে এক নারী টাঙ্গাইলে আসেন। আর গত এপ্রিলে প্রেমের টানে ফরিদপুরে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের এক নারী। কিছুদিন আগে প্রেমের টানে বরিশালে এসে বিয়ে করেন মার্কিন তরুণী।