অনলাইন ডেস্ক: স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭৩ সালের পর সব সরকারের আমলেই বরিশালের দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এই পটুয়াখালী জেলায় মন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার কোনো না কোনো এমপি দায়িত্ব পেয়ে আসছেন। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম ঘটেছে।
পটুয়াখালীর চারটি আসনই শেখ হাসিনাকে উপহার দিলেও মন্ত্রিপরিষদ নিয়ে ঘটেছে এক ভিন্ন চমক। হেভিওয়েট নেতাদের বাদ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ গঠন নিয়ে সারা দেশের মতো পটুয়াখালীতে চলছে নানামুখী আলোচনা। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি সাধারণ ব্যবসায়ীরাও এতে হতাশ হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নে ভাটা পড়বে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর আমলে পটুয়াখালীর এ অঞ্চলে মন্ত্রী পদে ছিলেন শাহাজাদা আবদুল মালেক খান। জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন আবদুল বাতেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের আমলে পটুয়াখালীর সন্তান এমএম মোমেন কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
এরপর ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম কেরামত আলী। তিনি সে সময়ে ধর্ম ও বাণিজ্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পটুয়াখালী-৩ আসনের এমপি আ.খ.ম জাহাঙ্গীর হোসেন পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে পটুয়াখালী-১ আসনে সাবেক বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময়ে তিনি স্বরাষ্ট্র এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে পটুয়াখালী-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পটুয়াখালী-৪ আসনের এমপি মাহবুবুর রহমান ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া পটুয়াখালী-২ আসনের এমপি আসম ফিরোজ সংসদের হুইপ পদের দায়িত্ব পালন করেন।
সর্বশেষ ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে আ স ম ফিরোজ সংসদের চিফ হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এবার একাদশ জাতীয় সংসদের নতুন মন্ত্রিসভায় এই জেলা থেকে কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রী পদে কেউ নেই।
এদিকে দীর্ঘ ১০ বছরের আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন গোটা দক্ষিণাঞ্চলে এখন দৃশ্যমান। কিন্তু বরিশালের দক্ষিণে কোনো এমপি মন্ত্রী পদে না থাকায় এ উন্নয়ন থমকে যাবে বলে আশঙ্কা করছে আওয়ামী লীগ সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
পটুয়াখালী শহর আওয়ামী লীগ নেতা জালাল আহমেদ, উন্নয়নকর্মী মাহফুজা ইসলামসহ একাধিক সংগঠক জানান, শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলে অনেক কিছু দিয়েছেন। তার কাছে চাইবার কিছুই নাই। তবুও তিনি আমাদের অভিভাবক। তাই তার কাছে আমাদের চাওয়ার শেষ নাই। দক্ষিণাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মহিউদ্দির আহমেদ জানান, দক্ষিণাঞ্চল উন্নয়নের ফলে বেশি সুফল ভোট করছে ব্যবসায়ীরা। বিগত দিনে পটুয়াখালীতে মন্ত্রী পদে কোনো না কোনো এমপি ছিলেন। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম হবে তা ভাবার বাইরে। তবে প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীতে অনেক কিছু দিয়েছেন। তাই আমার বিশ্বাস এবারো তিনি নিরাশ করবেন না।