মৃত্যুর আগে খাওয়াদাওয়া একদম ছেড়ে দিয়েছিলেন হিন্দি চলচ্চিত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা কাদের খান। মৃত্যুর আগে পাঁচ দিন কিছুই মুখে তোলেননি ৮১ বছরের এই অভিনেতা। এমনকি এক ফোঁটা পানিও না। বাড়ির খাবার ছাড়া কাদের খানের মুখে কিছু রোচে না। মৃত্যুর পাঁচ দিন আগে পর্যন্ত বাড়ির খাবার খেয়েছেন তিনি। কাদের খানের ছেলে সরফরাজের স্ত্রী সাহিস্তা নিজের হাতে রান্না করে শ্বশুরমশাইকে খাওয়াতেন। কিন্তু ডাক্তার পরে বাইরের খাবারের অনুমতি দেননি। কাদের খানকে হাসপাতালের খাবার খেতে বলা হয়। তখনই বেঁকে বসেন তিনি। হাসপাতালের খাবার খেতে একদম রাজি হননি। সাহিস্তার অনুরোধও রাখেননি। সাহিস্তা তাঁকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন, এই সময় খাবার খাওয়া কতটা জরুরি।
কাদের খানের এক বন্ধু জানান, ‘মৃত্যুর আগের পাঁচ দিন শুধু খাবার নয়, এক ফোঁটা পানিও খাননি তিনি। তা সত্ত্বেও ১২০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছেন। এমনটা সবার পক্ষে সম্ভব না।’
বাক্শক্তি না থাকায় কাদের খান চোখ দিয়ে সব প্রশ্নের জবাব দিতেন। চোখের অভিব্যক্তি দিয়ে দিয়ে বুঝিয়ে দেন, হাসপাতালের খাবার মোটেও মুখে তুলবেন না।
গত ৩১ ডিসেম্বর কানাডার সময় অনুযায়ী সন্ধ্যা ছয়টায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা কাদের খান। দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। ১৭ দিন ধরে কানাডার একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। মৃত্যুর আগে কোমায় চলে যান এই অভিনেতা। তাঁর ছেলে সরফরাজ খান বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের মাধ্যমে কাদের খানের মৃত্যুর খবর ঘোষণা দেন। সরফরাজ জানিয়েছেন ভারতে নয়, কানাডাতেই এই অভিনেতাকে দাফন করা হবে। প্রথমে তাঁর নিথর দেহটিকে মসজিদে নিয়ে যাওয়া হবে। জানাজার পর কাদের খানকে দাফনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এই বরেণ্য অভিনেতার প্রয়াণে হিন্দি চলচ্চিত্রের জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অমিতাভ বচ্চন, অনুপম খের, অর্জুন কাপুর, বরুণ ধাওয়ানসহ অনেক তারকা টুইটারে শোক জানান। এমনকি রাজনীতিবিদেরাও কাদের খানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং মোদি, রাহুল গান্ধী, স্মৃতি ইরানিসহ অনেকেই টুইট করেছেন।