মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সাড়ে ৩টা। ঢাকার ধানমন্ডির সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে সংযুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন নিজ আসনে বসে ঘুমাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের নৌকার প্রার্থী, বর্তমান এমপি ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী!
তবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের একেবারে শেষপর্যায়ে প্রার্থী পরিচিতি পর্বের আগেই জেগে ওঠেন বিভিন্ন সময় নানা কারণে বিতর্কের জন্ম দেয়া এমপি ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী!
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালেই প্রার্থীর ঘুমিয়ে পড়ার দৃশ্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকের চোখে পড়লেও পরিস্থিতির কারণে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন সবাই। তবে অস্বস্তি কাজ করেছে সবার মাঝে।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে শুরু থেকেই সজাগ ছিলেন দলের চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনের প্রার্থী ও নগর আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের মাঝেই একচোট ঘুমিয়ে নেন ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী! এ সময় তার পাশে ছিলেন চট্টগ্রাম-১৩ আসনের প্রার্থী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
দলীয় সভানেত্রীর বক্তব্য নিয়ে সব প্রার্থী ও নেতারা ছিলেন সিরিয়াস। কিন্তু ব্যতিক্রম জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েও দ্বিতীয়বারের মতো দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নেয়া ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী। সভায় একেবারে নির্ভার ছিলেন তিনি। ঘুমের ঘোরেই আচ্ছন্ন ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালীন অধিকাংশ সময়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক কর্মীসভায় তার দেয়া একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘ভবিষ্যতে, আমি আবার এমপি হলে আমরা সবাই ভাগ করে, বাঁটোয়ারা করে খাব, ইনশাআল্লাহ।’
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন চট্টগ্রাম-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম-৭ আসনের ড. হাছান মাহমুদ ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থী, জাসদ নেতা এমপি মঈন উদ্দিন খান বাদল।
মঈন উদ্দিন খান বাদল প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, `আপনি চাটগাঁইয়া ভাষা বুঝতে পারবেন না। এ ভাষায় একটা কথা বলতে চাই।’
তার বক্তব্যের মাঝেই প্রধানমন্ত্রী স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলেন ‘আমি চাটগাঁইয়া ভাষা বুঝি।’ এ সময় পুরো সভা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে।
পরে মঈন উদ্দিন খান বাদল চলিত বাংলা ভাষাতেই বলেন, ‘ঢাকা থেকে আপনি যে আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশ। কখনও কল্পনা করি নাই এটা সম্ভব হতে পারে ৷ ১০ বছর আগে আমরা ছিলাম ফকিন্নির পুত, ১০ বছর পরে আমরা এখন রাজপুত।’
কনফারেন্সে প্রার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) জাপা নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর-পাহাড়তলী) ডা. আফছারুল আমীন, চট্টগ্রাম-১১ আ.লীগ প্রার্থী এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) নজরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) মইনুদ্দীন খান বাদল, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া) ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভী, চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা।
আরও ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম প্রমুখ।