নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের পদত্যাগ দাবি করেছেন বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম।
তিনি বলেছেন, ‘ইসি সচিব আমাকে ইনসাল্ট (অপমান) করে কথা বলে নাগরিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ প্রকাশ করেছেন। আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ করব।’
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বুধবার এক সভায় হিরো আলম সম্পর্কে মন্তব্য করেন। ওই সভায় তিনি বলেন, হিরো আলম পর্যন্ত ইসিকে হাইকোর্ট দেখায়। সেও বলে যে ‘নির্বাচন কমিশনকে আমরা হাইকোর্ট দেখিয়ে ছাড়ছি।’
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার রাতে জাগো নিউজকে হিরো আলম বলেন, ‘একজন সচিব এমপি প্রার্থীর সঙ্গে তুই-তোমারি করে কথা বলতে পারেন না। তিনি আমারে ইনসাল্ট (অপমান) করে কথা বলেছেন। আমি সচিবের কথার নিন্দা জানাই এবং তার পদত্যাগ দাবি করছি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘সব মানুষই নির্বাচন করার অধিকার রাখে। আমি গরিব মানুষ বলে কি নির্বাচন করতে পারব না? সচিবরা হচ্ছেন রাষ্ট্রের চাকর। জনগণের টাকায় তাদের বেতন হয়। জনগণের সঙ্গে আদব নিয়ে কথা বলা দরকার।’
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে বগুড়া-৪ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন হিরো আলম। কিন্তু গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। পরে তিনি বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করলে ৬ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন তা খারিজ করেন। ইসির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ৯ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন হিরো আলমের আইনজীবী।
ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়েই আদালত তার মনোনয়নপত্র গ্রহণের জন্য ইসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। হিরো আলমের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন মো. কাউছার আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোট ভোটারের এক শতাংশ স্বাক্ষর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বিধান মতো হিরো আলমও জমা দেন। পরে কিছু স্বাক্ষর জালের অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
হাইকোর্টে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর হিরো আলমের আইনজীবী মো. কাউছার আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘হিরো আলমের প্রার্থিতা বাতিলে ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে তার বৈধ মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তার মানে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ। তিনি নির্বাচন করতে পারবেন।’
আদেশের পর হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এখন খুব খুশি। হাইকোর্টে যে ন্যায় বিচার পাওয়া যায়, তা প্রমাণ হলো। ইসি যে বলছিল আমার ভোটার তালিকা ভুয়া, তা আজ মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। ইসিকে হাইকোর্ট দেখিয়ে দিলাম।’
হিরো আলম বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রথমে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।