নতুন ‘দাস আইনের’ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন হাঙ্গেরির জনতা। গতকাল রোববার হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে বিক্ষোভে নামেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। গতকাল বুদাপেস্টের পার্লামেন্ট স্কয়ারের সামনে নতুন ‘দাস আইন’ পাসের প্রতিবাদে কয়েক হাজার মানুষ রাস্তায় জড়ো হলে পুলিশ তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। পাল্টা জবাবে ‘স্মোক গ্রেনেড’ ছোড়েন আন্দোলনকারীরা। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী ভিকতর অরবান দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম এত বড় আন্দোলনের মুখে পড়লেন তিনি।
শ্রমিক ইউনিয়নগুলো ও বিরোধী দলের ডাকা এই আন্দোলনে ‘বার্ষিক অতিরিক্ত ঘণ্টা’ বৃদ্ধির প্রতিবাদ করছেন মানুষ। সম্প্রতি কর্মক্ষেত্রে ‘বার্ষিক অতিরিক্ত সময়’ ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ ঘণ্টা করেছে অরবান সরকার। এমনকি মালিকপক্ষ মজুরি তিন বছর পর্যন্ত বিলম্বিত করতে পারবে—এমন আইনও করা হয়েছে।
সরকার বলতে চাইছে, শ্রমঘাটতির কারণে নতুন আইন মালিকপক্ষের জন্য খুবই জরুরি ছিল। এ ছাড়া যাঁরা অতিরিক্ত সময় কাজ করতে আগ্রহী, তাঁরা কিছুটা সুবিধা পাবেন। গত বুধবার এই আইন পাস হয়। এরপর থেকেই রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন লোকজন। তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘অরবান তুমি হটে যাও’। এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহত হয়েছে ১৪ পুলিশ।
বিক্ষোভরত শ্রমিকেরা বলছেন, ‘সরকারপক্ষ কারও সঙ্গে আলোচনা করে না। যা চাইছে তা–ই করছে। তারা আমাদের সবকিছু চুরি করে নিচ্ছে। এটা সহ্য করা যায় না। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।’
গত নভেম্বর থেকেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সরকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে মানুষ। গত ১৭ নভেম্বর থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে ব্যাপক গণ-আন্দোলনের মুখে পড়েছেন ফ্রান্সের মাখোঁ সরকার। ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনের চাপে পড়ে ন্যূনতম মজুরি বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এর মধ্যে বেলজিয়ামেও ‘ইয়েলো ভেস্ট’ নামে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেছেন হাজারো মানুষ। রাজধানী ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রী চালর্স মাইকেলের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় জড়ো হন তাঁরা। সার্বিয়ার কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী বেলগ্রেডে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কয়েক হাজার বামপন্থী সমর্থক। এ সময় সার্বিয়ার জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে প্রেসিডেন্টবিরোধী স্লোগান দেন তাঁরা। এর মধ্যে হাঙ্গেরি উত্তাল হলো আন্দোলনে।