নির্বাচনী প্রচারণার সময় গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকতার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রোববার রাত ৯টা) বেড, কাঁথা, বালিশ বিছিয়ে ও লেপ-কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছেন তিনি।
এরআগে রোববার দুপুর ২টায় কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের বল্লবভবাড়ি ও সরাতৈল এলাকায় আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে হামলা হয়। এ সময় বহরে থাকা চারটি গাড়ি ভাংচুর এবং তার অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
লতিফ সিদ্দিকী হামলার জন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারীর কর্মীদের দায়ী করে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, হামলারকারীদের গ্রেফতার ও কালিহাতী থানার ওসি মোশারফ হোসেনকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তিনি সেখানেই বসে থাকবেন বলে জানান।
আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী সোহেল হাজারীর নির্দেশে স্থানীয় চেয়ারম্যান হযরত তালুকদার, তোতা ও তার ছেলের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার নির্ধারিত সভা ছিল গোহালীয়াবাড়ি। সেখানে গাড়ি বহর পৌঁছামাত্র ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে করে এসে দুর্বৃত্তরা ইটপাটকেল মারা শুরু করে। সেখানের সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলে দুর্বৃত্তরা মিছিল নিয়ে সেই বাড়িতেও হামলা করে। তারা আমার চারটি গাড়ি ভেঙে চুরমার করে দেয়। অনেকে আহত হয়েছেন। এই হামলায় কালিহাতী থানার ওসির প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন করা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। তাই নির্বাচন করতে এসেছি। জনগণ যে রায় দিবে তা মাখা পেতে নেব। কিন্তু এখন দেখছি ভয়াভহ ব্যপার। তিনি বলেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের নিশ্চয়তা না পেলে আমি এখান থেকে উঠব না। কালিহাতীতে অবস্থান করলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাবে। জনগণ দুর্ভোগে পড়বে। সরকার বিব্রত হোক আমি তা চাই না। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এদিকে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় লতিফ সিদ্দিকীর কাছে গিয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ চাওয়া হয়েছে। আমরা অবশ্যই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তাদের গ্রেফতারে ইতিমধ্যে আইনশৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন। তাঁবু গেঁড়ে, লেপ-কম্বল নিয়ে রাত্রিযাপনের সব প্রস্তুতি সেরে শুয়ে পড়েছেন তিনি।