ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেয়েছিল পেস চতুষ্টয়। ভারত স্পিন চতুষ্টয়। বাংলাদেশ পেয়েছে ‘পঞ্চপাণ্ডব’! নামটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এরই মধ্যে। মহাভারতের পাণ্ডবপুত্রদের প্রতিচ্ছবিই যেন বাংলাদেশের এ পাঁচ ক্রিকেট তারকা। কদিন আগে তাঁরা একটা কীর্তিও গড়েছেন। পাঁচজনের একসঙ্গে খেলা হয়েছে ১০০ ওয়ানডে।
মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ—বাংলাদেশ ক্রিকেটের পাঁচ স্তম্ভ। এই স্তম্ভের ওপর ভর করে নির্মাণ হচ্ছে দেশের ক্রিকেটের সাফল্যের গল্প। এই পাঁচ একসঙ্গে খেলা চালিয়ে যাবেন আরও কিছুদিন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এক এক করে তাঁরা বিদায়ও নেবেন। তারপর? তাঁদের বলা হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালি প্রজন্ম। এই প্রজন্মের পরের প্রজন্মটা কারা, যাঁরা মাশরাফি-সাকিবদের মশালটা বয়ে বেড়াবেন?
আজ সংবাদ সম্মেলনে স্টিভ রোডসকে যখন প্রশ্নটা করা হলো, কোচকে সংসার চালাতে হয় ১১ জনকে নিয়ে, ‘এই পাঁচজনের কথা অনেকবার বলা হয়েছে। তাদের সম্মান করি। তারা দুর্দান্ত সব খেলোয়াড়। তবে আমি খুশি বাংলাদেশে এই পাঁচজনের বাইরে আরও দুর্দান্ত ক্রিকেটার আছে।’
অনেকবার বলা হয়েছে, ঠিক আছে। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা তো এখনো মেলেনি। রোডস অবশ্য মনে করেন, পঞ্চ পান্ডবের সঙ্গে দলের আরও কিছু ক্রিকেটার আছেন, যাঁরা এই পাঁচ তারকার মতোই হবেন স্বপ্ন সারথি, ‘মিরাজকেই দেখুন, এখনো পর্যন্ত কী একটা মৌসুম কাটাচ্ছে। তরুণ এই ছেলেটা দুর্দান্ত এক অলরাউন্ডার। ভালো ফিল্ডার, ভালো ব্যাটিং করতে পারে। স্পিন বোলিংয়েও অসাধারণ। আরেকজন ফিজ। আমার চোখে ডেথ ওভারে এখন সে অন্যতম সেরা বোলার। ওয়ানডে ক্রিকেটে অন্যতম সেরা বোলার। লিটন দাস, এশিয়া কাপের ফাইনালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটা সে খেলেছে। সৌম্যকে দেখুন, কদিনে দুটি দ্যুতিময় ইনিংস খেলেছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ইমরুল অসাধারণ খেলেছে। আমি মনে করি আমরা দারুণ কিছু খেলোয়াড় পেয়েছি, যারা দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। কাজেই বলতে পারেন, এটা দুর্দান্ত একাদশ। এটা শুনে ওই পাঁচজন খুশিই হবে। কারণ, আমরা একটা দল। এতে ওদের ওপর চাপও অনেক কমাবে।’
পাঁচ তারকা এক দিনে প্রতিষ্ঠিত হননি। তাঁরা নিজেদের গড়তে, তৈরি করতে সময় পেয়েছেন যথেষ্ট। খারাপ করুন, ব্যর্থ হোন কিংবা চোটে পড়ুন, তাঁদের ওপর ধারাবাহিক আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এখন সেটিরই প্রতিদান পাওয়া যাচ্ছে। একজন খেলোয়াড়কে গড়ে তুলতে টিম ম্যানেজমেন্ট কিংবা নির্বাচকদের কাছ থেকে এ সমর্থন পাওয়াটা খুব জরুরি। পাঁচ তারকার বাইরে থাকা খেলোয়াড়েরা কি এই সমর্থনটা পান? নির্বাচকেরা যে মাঝেমধ্যে বড় অধৈর্য হয়ে পড়েন কিংবা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। কেন অধৈর্য হয়ে পড়েন, কেনই বা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন? রোডস প্রশ্নটার প্রশংসা করলেন কিন্তু এর উত্তর তাঁর কাছে নেই, ‘খুবই ভালো প্রশ্ন। নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে আলোচনার সুযোগ আছে। আমি যেহেতু মাঠে (খেলোয়াড় নির্বাচনে) থাকি না, এটা নিয়ে কিছু বলতে পারব না। সত্যিই ভালো প্রশ্ন। ব্যাপারটা নান্নু (মিনহাজুল আবেদীন) কিংবা অন্য নির্বাচকদের বলতে পারেন।’