ভারতের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি)। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়-এই তিন রাজ্যই হাতছাড়া হচ্ছে বিজেপির। অন্যদিকে এই রাজ্যগুলোয় সরকার গঠনের পথে হাঁটছে কংগ্রেস।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, তেলেঙ্গানা ও মিজোরামে একাধিপত্য দেখাচ্ছে স্থানীয় দুটি দল। তেলেঙ্গানায় চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল টিআরএস আসন দখলের শীর্ষে আছে। মিজোরামে সরকার গঠন করবে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)।
হিন্দি হার্টল্যান্ডের তিন গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হলো রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়। তিন রাজ্যেই ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। ২০১৩ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল মোদির দল। এবারের নির্বাচনে উল্টো ধুয়েমুছে গেছে বিজেপি। হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের সরকার গঠন নিশ্চিত। মধ্যপ্রদেশেও এগিয়ে আছে কংগ্রেস। সেখানে রাজ্য সরকার গঠনের জন্য হাতেগোনা কয়েকটি আসন প্রয়োজন রাহুল গান্ধীর দলের। কংগ্রেসের বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে, মধ্যপ্রদেশে এখন যতটুকু সংশয় আছে, তা কাটাতে বিএসপির নেত্রী মায়াবতীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, মায়াবতীর সমর্থন পেলে সেখানে সরকার গঠনে আর কোনো সমস্যা হবে না কংগ্রেসের।
দিল্লি ও জয়পুরে কংগ্রেসের দলীয় প্রধান কার্যালয়ে এরই মধ্যে সমর্থকেরা উদ্যাপন শুরু করে দিয়েছেন। রাজস্থানের শীর্ষ কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট বলেছেন, ‘সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা আমরা অর্জন করেছি। তবে তা সত্ত্বেও সরকার গঠনের সময় একই আদর্শের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আমরা আলোচনা করব।’
ওদিকে ছত্তিশগড়ের হার বিজেপিকে হতবাক করেছে। কারণ সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী রমন সিং বেশ জনপ্রিয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, মাওবাদী অধ্যুষিত এই রাজ্যে কংগ্রেসের একচেটিয়া বিজয় অভাবনীয়।
গুরুত্ব বিবেচনায় এই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলের দিকে ভারতবাসী নজর রাখছে। পাঁচ রাজ্যের ভোটকে কেন্দ্র করে সব দলই বলে আসছিল যে এটি হবে আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল। আর ফাইনাল হবে আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে।
গত ১২ নভেম্বর মাওবাদী-অধ্যুষিত রাজ্য ছত্তিশগড় থেকে নির্বাচন শুরু হয়। রাজ্যে দুই দফায় ভোট হয়। দ্বিতীয় দফার ভোট হয় ২০ নভেম্বর। মধ্যপ্রদেশ ও মিজোরামে ভোট হয় গত ২৮ নভেম্বর। রাজস্থান ও তেলেঙ্গানায় ভোট হয় ৭ ডিসেম্বর। শুক্রবার শেষ দফার নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর প্রকাশিত হয় বুথফেরত জরিপ। তিন রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে বলে সেই জরিপেও আভাস মেলেনি।