যাক, সংবাদ সম্মেলনটা তাহলে ‘রাজনীতিমুক্ত’ই থাকল! মাশরাফি বিন মুর্তজা অবশ্য রাজনীতি-বিষয়ক কথাবার্তা আগেই বলে ফেলেছেন। সেদিনই বলেছেন, ‘খেলার আগে এ নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন না হোক, এ জন্য যা করার এখনই করে ফেললাম।’
মাশরাফি এখন শুধুই ক্রিকেটার নন, রাজনীতিকও। চাইলেও খেলা-রাজনীতি আলাদা করতে পারবেন না। তবুও সংবাদমাধ্যম তাঁর চাওয়াটা পূরণ করেছেন। সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক কোনো প্রশ্ন তারা করেনি। তবে আজ বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কের সম্মেলনটা শুরুই হলো এক ‘নিষ্ঠুর’ প্রশ্ন দিয়ে। গত ৪ ডিসেম্বর রাজনীতি-বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনের দিনেই মাশরাফি বলেছেন, ‘আমার বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলার চিন্তা আছে। তারপর ভেবে দেখার সুযোগ আছে, আমি যদি সে অবস্থায় না থাকি তাহলে অবশ্যই আমাকে খেলাটা ছাড়তে হবে।’ ২০১৯ বিশ্বকাপ দিয়েই যদি ক্যারিয়ারের যতি চিহ্ন টানেন তবে কাল থেকে শুরু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুরু ওয়ানডে সিরিজটা দেশের মাঠে তাঁর শেষ সিরিজ, এটা বললে কি ভুল হয়?
আইসিসির ভবিষ্যৎ সফরসূচি (এফটিপি) দেখেই কথাটা বলা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর বাংলাদেশ আগামী ফেব্রুয়ারিতে যাবে নিউজিল্যান্ড সফরে। সেখান থেকে ফিরে কদিনের বিরতি। এরপরই শুরু হয়ে যাবে বিশ্বকাপ অভিযান। বিশ্বকাপ খেলার আগে মে মাসে আয়ারল্যান্ডে খেলবে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ। এফটিপি আর মাশরাফির ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলার চিন্তাই বলে দিচ্ছে, এটাই দেশে মাশরাফির বিদায়ী সিরিজ।
শেষ সিরিজ প্রশ্নে মাশরাফি যে উত্তর দিলেন, তাতে দেখা যাচ্ছে ‘শেষ’ বলার উপায় নেই, ‘বলা কঠিন, আসলে ভবিষ্যতের কথা বলা যায় না।’ তাহলে কোন ভাবনায় তিনি এগোচ্ছেন? এ প্রশ্নের উত্তরেও সুনির্দিষ্ট কিছু বললেন না, ‘আমার কোনো দিনই ভাবনা থাকে না। কোনো কিছু ভেবে করি না। দেখা যাক সামনে কী হয়।’
সামনে কী হবে, সেটি আগ থেকে কেউ বলতে পারে না। অনুমান করতে পারে মাত্র। তবে এটা বলা যাচ্ছে, কাল নতুন একটা মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছেন মাশরাফি। বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার হিসেবে প্রথমবারের খেলতে নামবেন ২০০তম ওয়ানডে। ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরির রোমাঞ্চ অবশ্য তাঁকে স্পর্শ করছে না, ‘আগেও বলেছি, এসব আমাকে স্পর্শ করে না। এসব আমার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণও না। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কাল ম্যাচটা জেতা। এ দিক থেকে ভালো লাগছে যে, বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে সংস্করণে অন্তত ২০০তম ম্যাচ হচ্ছে। এটা অবশ্যই ভালো লাগবে একটা সময়। যখন মানুষ বলবে, তুমি বাংলাদেশের হয়ে ২০০টা ম্যাচ খেলেছ। অবশ্যই একটা অর্জন। ওই জায়গা থেকে অবশ্যই ভালো লাগবে। কিন্তু কাল ম্যাচের চেয়ে গুরুত্ব আর কিছু হতে পারে না। এটা ভেবে খেলার সুযোগ নেই। কাল ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ, যেটাতে আমাদের জিততে হবে।’
মাশরাফি তাহলে ২০০তম ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে চান জয় দিয়েই।