ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষ রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংসদ এবং বিধানসভার বিধায়কদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলছে ৪ হাজার ১২২টি ফৌজদারি মামলা। এর মধ্যে কোনো কোনো মামলার বয়স তিন দশক পেরিয়ে গেছে। এসব মামলার বহু সাংসদ ও বিধায়ক এখন সাবেক হয়ে গেলেও মামলা বহালই রয়েছে।
এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনে বিশেষ আদালত গঠন করে বিচারব্যবস্থা দ্রুত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা ও আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। তিনি তাঁর আরজিতে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদনের পাশাপাশি অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিদের কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন জানান।
গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি এই মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টের কাছে এ–সংক্রান্ত মামলার নথি পেশ করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ আদালত গঠনের ওপরও জোর দেন। এসব মামলার নিষ্পত্তি দ্রুত করার লক্ষ্যে বিশেষ আদালত গঠন করা যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন। আবেদনকারী আইনজীবী আরও দাবি করেছেন, অভিযুক্ত রাজনীতিবিদদের আজীবনের জন্য নির্বাচনে লড়া নিষিদ্ধ করা হোক। এসব কথা শোনার পর বিচারপতি এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন।
আবেদনকারী তাঁর আবেদনে বলেন, এখন দেশের সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে ৪ হাজার ১২২টি ফৌজদারি মামলা ঝুলছে। নিষ্পত্তি হচ্ছে না। কোনো মামলা আবার ৩০ বছরের পুরোনো। কিছু মামলা চলছে ১৯৯১ সাল থেকে। যদিও ২৬৪টি মামলার শুনানি স্থগিত রেখেছে ভারতের কয়েকটি হাইকোর্ট; বেশ কিছু মামলার এখনো অভিযোগ গঠন হয়নি। এই মামলার সঙ্গে যুক্ত অনেক সাংসদ–বিধায়ক এখন সাবেক হয়ে গেছেন। ক্ষমতায় নেই ।
ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় রয়েছে ২৫০ জন সাংসদ বা এমপি আর নিম্নকক্ষ লোকসভায় রয়েছে ৫৪৩ জন সাংসদ বা এমপি। এ ছাড়া ভারতের ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রশাসিত রাজ্যে রয়েছে ৪ হাজার ১২০ জন বিধায়ক বা এমএলএ। এর মধ্যে বিজেপির রয়েছে ১ হাজার ৪১৫ জন আর কংগ্রেসের রয়েছে ৭৮৬ জন। অন্যদিকে, বাম দলের রয়েছে ১৭৮ জন বিধায়ক।
তবে মামলায় থাকা বিধায়কের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি উত্তর প্রদেশে। সংখ্যা ৪০৩ জন। এরপর রয়েছে যথাক্রমে পশ্চিমবঙ্গ (২৯৪), মহারাষ্ট্র (২৮৮), বিহার (২৪৩), তামিলনাড়ু (২৩৪), মধ্যপ্রদেশ (২৩০) ও কর্ণাটক (২২৪)। আর সবচেয়ে কম বিধায়ক রয়েছে পদুচেরি রাজ্যে—৩০ জন। ত্রিপুরায় ৬০ জন বিধায়ক।