বিশ্বনন্দিত মোটরসাইকেল কোম্পানি হোন্ডা এবং বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের (বিএসইসি) যৌথ মালিকানায় বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের কারখানা উদ্বোধন করা হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাত্র ১ বছরের মধ্যে কারখানাটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে সক্ষম হলো।
রোববার শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার চর বাউশিয়ার আব্দুল মোমেন ইকোনমি জোনে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইন্টার-পার্লামেন্ট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি, বাংলাদেশ ইকোনমি জোনের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, বাংলাদেশ স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত হিরোয়াসু ইজুমি।
উদ্বোধনকালে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ‘এটি জাপান ও বাংলাদেশের বিনিয়োগের একটি সফল দৃষ্টান্ত। আজ থেকে এতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হচ্ছে।
এটি বাংলাদেশের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। দীর্ঘ ৫ বছরের প্রচেষ্টায় হোন্ড ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল সংযোজন থেকে নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন শুরু হলো। আমার বিশ্বাস এর মাধ্যমে জাপান বাংলাদেশর দ্বি-পাক্ষিক বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার।
এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তৃণমূল পর্যায়ে জ্ঞানভিত্তিক ও সবুজ শিল্পায়ন প্রসারে জোরদার করা হচ্ছে। এসজিডি লক্ষ্য অর্জনে আমরা টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব আধুনিক শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরাসরি কিংবা যৌথ বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে।
এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইতোমধ্যে উন্নত দেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল আব্দুল মোনেম ইকোনমি জোনে গড়ে ওঠা আজকের এ মোটরসাইকেট ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানাও বিদেশি বিনিয়োগের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রণোদনায় আকৃষ্ট হয়ে বাংলাদেশ হোন্ড লিমিটেড ২০১২ সালে এ দেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসে। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী কারখানাটি নিজস্ব জায়গায় সংযোজন থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম শুরু করেছে। দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বমানের মোটরসাইকেল উৎপাদন আমাদের সরকারের অন্যতম লক্ষ্য।’
মুন্সীগঞ্জে ২৫ একর জমিতে ২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে যৌথভাবে এ কারখানা গড়ে তোলে হোন্ডা এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন। হোন্ডার ৭০ ভাগ ও ৩০ ভাগ বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশ স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন। ১৪ হাজার আয়তনে এ ফ্যাক্টরিতে বছরে ১ লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। বাজারের প্রবণতা বুঝে এ ফ্যাক্টরিতে ২০২১ সালের মধ্যে ২ লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
নতুন এ ফ্যাক্টরি চালু হওয়ায় যেমন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, তেমনি এখানকার কর্মীরাও আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে ও কাজ করতে পারবে। বর্তমানে ৩৯০ জন জনবল নিয়ে কাজ শুরু করলেও বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে জনবল বাড়ারও ব্যবস্থা নেবে কোম্পানিটি।