বুধবার , ৩১ অক্টোবর ২০১৮ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

ক্রীড়া অবকাঠামো দর্শনে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ কর্মকর্তার চীন ভ্রমণ!

প্রতিবেদক
Alltime BD News24 .com
অক্টোবর ৩১, ২০১৮ ৭:৩০ অপরাহ্ণ

ক্রীড়া অবকাঠামো তৈরির অভিজ্ঞতা অর্জনের নামে কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ চলছেই। পূর্বাচলে ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছ থেকে জায়গা বরাদ্দ পেয়েই গত বছর অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে গিয়েছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব আখতার উদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। সফরকারী দলে ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের তৎকালীন সচিব অশোক কুমার বিশ্বাসসহ পরিষদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের আরেক কর্মকর্তা।

লাখ লাখ টাকা ব্যয়ের ওই সফরের ফলাফল শূন্য। কারণ, পূর্বাচলে এখন স্টেডিয়াম নির্মাণ হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে। যেখানে অস্ট্রেলিয়া সফর করে জ্ঞান অর্জনকারীদের কোনো ভূমিকাই থাকছে না। ওই সফরকারী দলের বেশিরভাগ কর্মকর্তা এখন ক্রীড়া মন্ত্রণালয়েও নেই। কেউ অবসরে গেছেন, কেউ বদলি হয়ে গেছেন অন্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তারপরও থেমে নেই সরকারী অর্থ শ্রাদ্ধের এই অপরিকল্পিত বিদেশ ভ্রমণ।

এবার কাবাডি ও ভলিবলের অবকাঠামো উন্নয়নের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য চীন সফরে যাচ্ছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ৬ কর্মকর্তা। সরকারী এ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ক্রীড়া) ওমর ফারুক। প্রতিনিধি দলের চীন সফরের বাজেট ২৫ লাখ টাকা। বৃহস্পতিবার রাতে চায়না সাউদার্নের একটি ফ্লাইটে তাদের চীনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করার কথা।

প্রতিনিধি দলের অন্য কর্মকর্তাগণ হচ্ছেন- পরিকল্পনা কমিশনের সহকারী প্রধান (এসইআইডি) স্বপন কুমার ঘোষ, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. সুকুর আলী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব অরুন কুমার মন্ডল, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক (বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন) মৌসুমী হাবিব এবং বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের যুগ্ম-সম্পাদক-১ ফজলে রাব্বি।

পল্টন ময়দান সংলগ্ন কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়ামের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রজেক্টের প্রধান কাজ হচ্ছে দুই ফেডারেশনের জন্য ৬ তলা দুটি ভবন নির্মাণ। বর্তমানের দ্বিতল ভবনটি ভেঙ্গে সেখানে নির্মাণ করা হবে একই আদলের দুটি নতুন ভবন। এর পাশাপাশি কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে শেড, ভিআইপি বক্স, ম্যাটসহ আরো কিছু সংস্কার কাজ আছে এ প্রকল্পে।

দুই ভবনেই দুটি করে চারটি ফ্লোরে তৈরি করা হবে হোস্টেল। যাতে সংশ্লিষ্ট খেলার আবাসিক ক্যাম্প ওখানেই হতে পারে। এছাড়া দুই ভবনেই থাকছে আধুনিক ইকুইপমেন্টসহ জিমনেশিয়ামের ব্যবস্থা। পুরো কাজের জন্য ব্যয় হবে ১৯ কোটি টাকা। এ জন্য দরপত্রও সম্পন্ন হয়েছে। পুরনো বিল্ডিং ভাঙ্গার মধ্যে দিয়ে নভেম্বরেই শুরু হচ্ছে প্রজেক্টের কাজ। শেষ হবে আগামী বছর জুনের মধ্যে।

কাবাডি ও ভলিবলের অবকাঠামো উন্নয়নের প্রজেক্ট হলেও প্রতিনিধি দলে নেই কাবাডির কেউ। ভলিবল ফেডারেশন যুগ্ম সম্পাদক-১ ফজলে রাব্বিকে এই প্রতিনিধি দলে রাখা হলেও তিনি সফর সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই জানেন না।

‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে টিকিট পাঠিয়েছে। ১ নভেম্বর রাতে ফ্লাইট। টিকিট দেখে এতটুকু বুঝেছি ১ তারিখ গুয়াংজু যাবো। সেখান থেকে ৫ নভেম্বর সাংহাই। সাংহাই থেকে ঢাকায়; কিন্তু ওখানে গিয়ে কী করবো, কোথায় কী প্রোগ্রাম আছে কিছুই জানি না’- জানিয়েছেন বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক-১ ফজলে রাব্বি।

মজার বিষয় হলো, প্রতিনিধি দলের চীন সফরের বাজেট ২৫ লাখ টাকা হলেও ভলিবল ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদককে বলা হয়েছে কিছু ডলার সঙ্গে নিতে থাকা-খাওয়ার জন্য। ফজলে রাব্বি বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে একজন ফোন করে আমাকে জানিয়েছেন, এক/দেড় হাজার ডলার সঙ্গে নিয়েন থাকা-খাওয়ার জন্য। প্রজেক্টের টাকা পাস হলে দিয়ে দেয়া হবে। আমি বলেছি, এভাবে তো যাওয়া সম্ভব না। টাকা খরচ করে গেলে ভলিবল ফেডারেশনের অনুমতি লাগবে। এভাবে যাওয়ার কোনো শখ নেই আমার।’

১৯ কোটি টাকার এ প্রজেক্টের প্রধান কাজ মূলতঃ লিফটসহ দুটি ৬ তলা ভবন। এর জন্য ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করে জ্ঞান অর্জনের জন্য সূদুর চীনে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে সফরকারী দলের অন্যতম সদস্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. সুকুর আলী বলেন, ‘পরিকল্পনা কমিশনের মাধ্যমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একটা কমিটি আছে তারা যাচাই বছাই করে এ প্রতিনিধি দলকে চীন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যৌক্তিকতা বিবেচনা করেই এ ধরনের প্রজেক্টে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এমন ভ্রমণ হয়ে থাকে।’

চীন সফরের যৌক্তিকতা উল্লেখ করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আসলে কম জায়গার মধ্যে কিভাবে সর্বাধিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা যায়, বিদেশে কীভাবে কি করে- সেটা দেখার জন্যই এই সফর। আপনাদের মনে হতে পারে দুটি বিল্ডিংই বড় কাজ; কিন্তু এখানে আরো অনেক কাজ আছে। প্রকল্প যারা ম্যানেজ করেন তাদের চিন্তাভাবনা নানারকম। আমরা চিন্তা করছি, অল্প জায়গার মধ্যে অবকাঠামোগুলো কিভাবে আরো আধুনিক করা যায়।’

সরকারী এই ৬ কর্মকর্তার বাইরেও যাচ্ছেন আজমল কবীর রাব্বি নামের আরেকজন। তিনি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ট্রেনিং)। আজমল কবীর রাব্বি বলেছেন, ‘সবাই এক সঙ্গে যাচ্ছি। তবে আমি ওই প্রতিনিধি দলের বাইরে।’

(Visited ১ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি