স্বপ্ন দেখেন একদিন অনেক বড় ফটোগ্রাফার হবেন, দেশজোড়া নাম থাকবে। তবে আর দেরি কেন? স্বপ্নতেই তবে শুরু করুন নিজের ক্যারিয়ার! শখের বসে এ পেশায় এসে না আবার না খেয়ে থাকতে হয় এসব ভেবে দিনকে রাত আর রাতকে দিন না করে খোঁজ নিন, জানুন আপনার জন্য কতো সুযোগ অপেক্ষা করছে এ জগতে।
আজকাল ফটোগ্রাফি পেশায় আগ্রহ বাড়ছে তরুণ-তরুণীদের। বর্তমানে এ পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। আর এ পেশার ব্যাপ্তিও রয়েছে অনেক। জ্ঞান-বিজ্ঞানের এ যুগে সৃজনশীলতা প্রকাশের ফটোগ্রাফি একটি উল্লেযোগ্য মাধ্যম। চাইলে আপনিও নিজের জ্ঞান এবং সৃজনশীলতা অনুসারে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন ফটোগ্রাফির নানা শাখায়।
ফটো সাংবাদিককতা : ফটোগ্রাফির একটি বিরাট অংশ দখল করে রেখেছে ফটোসাংবাদিকতা। সংবাদপত্র ছাড়াও ফটো এজেন্সি, অনলাইন পত্রিকা, সংবাদ এজেন্সি প্রভৃতি ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ফটোগ্রাফি পেশায় যারা অ্যাডভেঞ্চারও খুঁজতে চান, তাদের জন্য বেশি কাক্সিক্ষত ফটো সাংবাদিকতা পেশা।
ফ্যাশন ফটোগ্রাফি : ফ্যাশন ফটোগ্রাফাররা ফ্যাশন হাউসগুলোর জন্য কাজ করেন বা কোনো মডেল বা ডিজাইনারদের হয়েও কাজ করেন। তবে এই বিষয়ে ফটোগ্রাফারকে আধুনিক ফ্যাশন ট্রেন্ড সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।
পোরট্রেট ফটোগ্রাফি : কোনো ব্যক্তি বিশেষের অনুষ্ঠানে, বিবাহ সংক্রান্ত ফটোগ্রাফি বা কারো কোনো সুন্দর বাড়ি ইত্যাদির ছবি পরিবেশনই এই গোত্রের ফটোগ্রাফির উদ্দেশ্য। এই বিষয় নিয়ে যে ফটোগ্রাফাররা কাজ করেন, তারা ব্যক্তিগত কাজের এগজিবিশন করেও অনেক সময় রোজগার করতে পারেন।
তবে শুধু পোরট্রেট ফটোগ্রাফাররাই নন, ব্যক্তিগত কজের এগজিবিশন করেও অর্থ রোজগার করতে পারেন, প্রায় সব ধরনের ফটোগ্রাফাররাই। এছাড়াও ফিল্ম ফটোগ্রাফি, বিজ্ঞাপণ ফটোগ্রাফিও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নতুন ধরনের আর্থসামাজিক কাঠামোয়।
ফ্রিল্যান্সার ফটোগ্রাফিঃ একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও ফটোগ্রাফির কাজ করা যায়। তবে এক্ষেত্রে কাজের অ্যাসাইমেন্ট যোগাড় করতে হয় এবং বহু রকমের ফটোগ্রাফি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
“কাজ পেতে হলে অভিজ্ঞতা লাগবে, অভিজ্ঞতা অর্জন করতে কাজ লাগবে” এমন দোটানায় আর নয়!
এরকম দোটানায় না থেকে আগে নিজের দক্ষতা বাড়ান। আর দক্ষ ফটোগ্রাফার হতে হলে আপনাকে হতে হবে সৃজনশীল। আলো ছায়ার খেলায় দৃশ্যের মধ্যকার অদৃশ্য ও অস্পষ্ট বিষয়কেও অর্থবহ এবং উজ্জ্বলভাবে সামনে আনার ক্ষমতা আপনার থাকতে হবে। মুক্তভাবে চিন্তা করতে হবে একটি ছবিকে গভীরভাবে ফুটিয়ে তুলতে। এ পেশায় ধৈর্য অত্যাবশ্যক।
কাজের ব্যাপারে ফটোগ্রাফার যত বেশি আন্তরিক থাকবেন, তত দ্রুত সাফল্য ও সার্থকতা আসবে এ পেশায়।যে কোনো পরিস্থিতিতে পেশাদারিত্বের কথা মাথায় রেখে ছবি তোলার মানসিকতা থাকতে হবে। বর্তমানে ফটোগ্রাফির চূড়ান্ত ফলাফল যেহেতু অনেকাংশে কম্পিউটারনির্ভর, তাই দক্ষ ফটোগ্রাফার হতে হলে প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকা জরুরি।
ছবিতে বিভিন্ন মাত্রা যোগ করতে, ছবিকে প্রাণবন্ত করে তুলতে ফটোশপের নানা ভার্সনে কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে। যারা স্টুডিওতে বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফি করতে চান, তাদের ক্ষেত্রে প্রিন্টারে ছবি প্রিন্ট, ছবির কালার সিলেকশন, বিভিন্ন ইফেক্টের সফল ব্যবহারের জন্য কম্পিউটারে দক্ষতা জরুরি।
আমাদের দেশে এখন বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফির প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে পাঠশালা, বেগার্ট, প্রিজম, কাউন্টার ফটো উল্লেখযোগ্য। পাঠশালা থেকে ফটোগ্রাফিতে গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত করা যায়। কাউন্টার ফটোতে করা যায় এক বছরের ডিপ্লোমা। প্রিজম থেকে নেওয়া যায় ছয় মাসের ডিপ্লোমা। আর সবচেয়ে প্রাচীন আলোকচিত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেগার্ট থেকেও নিতে পারেন প্রশিক্ষণ।
এছাড়াও ফটোফি, বিপিএস, ফ্রাস্ট লাইট, অলিয়ঁস ফ্রঁসেস, ডিইউপিএস, চঞ্চল মাহমুদ স্কুল অব ফটোগ্রাফি, ঢাকা ফটোগ্রাফিক ইনস্টিটিউট ও ফটো লাউঞ্জের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বেসিক, অ্যাডভান্স বেসিক ও বিভিন্ন বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই মিলবে এসব প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য।
তাহলে আর দেরি কেনো? স্বপ্নের ঘুড়িটি উচ্চ শিখরে ওড়াতে হাতের নাটাইটি আরও শক্ত ও মজবুত করে লেগে পড়ুন!