সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় চুরির অপবাদ দিয়ে নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক কায়দায় দুই কিশোরকে নির্যাতন করা হয়েছে। দুই কিশোর বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তাদের চোখ বেঁধে বুকে-পিঠে পেরেক ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার কিশোররা হলো- দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের হকিয়ার চর গ্রামের আল ইমরান (১৫) ও মোল্লারবন গ্রামের ইমরান আহমদ (১৬)।
নিষ্ঠুরতার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হয়। এরপর পুলিশ দুই কিশোরকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান পীর ফয়জুল হক ইকবালের জিম্মায় ছেড়ে দেয়। পরে পরিবারের লোকজন তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে আল ইমরান ও ইমরান আহমদকে রাস্তা থেকে লোকমান আহমদের নেতৃত্বে তার লোকজন ধরে নিয়ে যায়। এরপর গরু চুরির অপবাদ দিয়ে তাদের অমানবিক নির্যাতন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চোখ বেঁধে বুকে-পিঠে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে পেরেক ঢুকিকে দেয়া হয়। বেধড়ক পেটানো হয় তাদের। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নির্মম নির্যাতনের পর তাদের তুলে দেয়া হয় পুলিশের হাতে।
লালাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পীর ফয়জুল হক ইকবাল বলেন, নির্যাতন করা হয়েছে এ কথা সত্য। চোরকেও কেউ এমনভাবে নির্যাতন করে না। নির্যাতনের পর পুলিশের কাছে তুলে দিলে আমি তাদের আমার জিম্মায় ছাড়িয়ে এনেছি। বর্তমানে তারা ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
লালাবাজার ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুর রহিম জানান, এই দুই কিশোর চোর নয়। পূর্ব-শত্রুতার জের ধরেই চুরির অপবাদ দিয়ে দুই কিশোরকে পৈশাচিক নির্যাতন করা হয়।
দুই কিশোরকে নির্যাতনকারীরা হলেন- লোকমান আহমদ, শিপন আহমদ, জাহেদ মিয়া, তারেক মিয়া, রাসেল মিয়া, জাবের মিয়া, সাদ আহমদ, শাহাজাহান, মিজান, লিপন ও বাবুল আহমদ। তারা উপজেলার বিবিদইল গ্রামের বাসিন্দা।
মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুই কিশোরকে চেয়ারম্যানের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। যারা গরু চুরির কথা বলে মারধর করেছে তারা কোনো অভিযোগ দেয়নি। ওই দুই কিশোরের পক্ষ থেকেও কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।