আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নোঙর করে রাখা একটি মহাকাশ যানে ছোট্ট একটি ছিদ্র দেখা যাওয়ার পর এনিয়ে হৈ চৈ শুরু হয়েছে।
এই ছিদ্রটি সেখানে কিভাবে তৈরি হলো সেটা এখনও একটা রহস্য।
তার মধ্যেই রাশিয়ায় বেসামরিক মহাকাশ সংস্থার প্রধান বলেছেন, ড্রিল মেশিন দিয়ে এই ছিদ্রটি তৈরি করা হয়েছে। তিনি ধারণা করছেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা করা হয়ে থাকতে পারে।
সয়ুজ মহাকাশ যানের ক্রু সদস্যরা গত বুধবার যানটির গায়ে এই ছিদ্রটি দেখতে পায়। টেপ লাগিয়ে তারা এই ছিদ্রটি বন্ধ করে রাখার চেষ্টা করছে।
ছিদ্রটির কারণে মহাকাশ যানের ভেতরে চাপ সামান্য কমে গেছে।
রুশ সংস্থাটির প্রধান দিমিত্রি রগোজিন বলেছেন, “এভাবে আরো কয়েকটি ছিদ্র করার চেষ্টা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি বলছেন, “ছিদ্র দেখে বোঝা যাচ্ছে কাঁপা কাঁপা হাতে ছিদ্রটি করা হয়েছে।”
আগে ধারণা করা হয়েছিল মহাকাশে ভাসমান ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোন পাথর যা এক মাইক্রোমিটারের মতো বড়, কিম্বা মহাকাশের কোন অরবিটাল বর্জ্যের আঘাতে এই ছিদ্রটি তৈরি হয়ে থাকতে পারে।
কিন্তু রুশ মাহাকাশ সংস্থা সেই আশঙ্কা বাতিল করে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে বর্তমান ছ’জন ক্রু সদস্য অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে তিনজন আমেরিকান, দুজন রুশ এবং একজন জার্মান।
মি. রগোজিন বলছেন, যে এই ছিদ্রটি করেছে আমরা সেই দোষী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এজন্যে একটি কমিশন গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, রুশ যে কোম্পানি এই সয়ুজ মহাকাশ যানটি তৈরি করেছে এই ঘটনা তাদের জন্যে একটি ‘সম্মানহানির’ ব্যাপার।
ছিদ্রটি সয়ুজ মহাকাশ যানের এমন একটি অংশে করা হয়েছে যা নভোচারীদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার সময় ব্যবহার করা হবে না।
মহাকাশ যানের গায়ে ছিদ্র তৈরি হওয়ার এই ছবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
রাশিয়ায় মহাকাশ শিল্পের একটি সূত্র রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসকে জানিয়েছেন কাজাখস্তানের বাইকোনর কসমোড্রোমে পরীক্ষার সময় এই মহাকাশ যানটির ক্ষতিসাধন হয়ে থাকতে পারে।
তারপর প্রাথমিক পরীক্ষার পর এই ত্রুটি হয়তো ঢেকে রাখা হয়েছিল।
“কেউ হয়তো এরকম একটা কিছু করে ফেলেছে। তারপর ভয়ে ওই ছিদ্রটা ঢেকে রাখার চেষ্টা করেছে,” ওই সূত্রটির জল্পনা এরকমই, “যেটি দিয়ে ছিদ্রটি বন্ধ করা হয়েছিল সয়ুজ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পৌঁছানোর পর সেটি শুকিয়ে হয়তো খুলে পরে গেছে।”
কিন্তু মি. রগোজিন, যার বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচার করা হয়েছে, তিনি বলেছেন: “তৈরি করার সময় এই ত্রুটি ছিল নাকি পূর্বপরিকল্পিত- সেটা আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। কিন্তু এখানে আরো একটা বিষয় আছে যেটা আমরা এখনই উড়িয়ে দিচ্ছি না।”
কি সেটা?
“মহাকাশে কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই হামলা করেছে কিনা!”