জনপ্রিয় চলচ্চিত্রশিল্পী সালমান শাহের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৬ সালের এইদিনে তিনি পাড়ি জমান অনন্তলোকে। সালমান শাহ বিদায় নিয়েছেন ২২ বছর হলো। তার প্রসঙ্গ এলে এখনও বলা হয়- ‘বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সালমান শাহের শূন্যস্থানটি আজও কেউ পূরণ করতে পারেনি।’ আজও বর্তমান হয়ে আছেন অগণিত ভক্তের হৃদয়ে। এ জনপ্রিয়তা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে।
তার মূল নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। চলচ্চিত্রে এসে নাম নেন ‘সালমান শাহ’। ১৯৭০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। তিনি পরিবারের বড় ছেলে।
সালমান শাহ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম সামিরা। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন। কিন্তু সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ে তিনি এখনও এভারগ্রিন ওয়ান্ডারবয় সালমান শাহ।
তার মৃত্যুতে সমগ্র চলচ্চিত্রশিল্পে শোক নেমে আসে। শোক সইতে না পেরে অনেক ভক্ত আত্মাহুতির পথও বেছে নিয়েছিলেন। অনেক উত্থান-পতনের মধ্যদিয়ে গেছে বাংলা চলচ্চিত্রশিল্প। এর সঙ্গে অনেকে সালমানের মৃত্যুকে মিলিয়ে দেখেন। তাই আজও নতুন কোনো শিল্পীর কথা উঠলেই স্বাভাবিকভাবেই উদাহরণ হিসেবে চলে আসে সালমান শাহ।
তার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ছবি করা নায়িকা শাবনূর আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘সালমান বেঁচে থাকলে আমরা দুজনে উত্তম-সুচিত্রার মতো হতে পারতাম।’
আজও নতুন কোনো পরিচালক সালমান শাহ অভিনীত ছবির রিমেক করার উদ্যোগ নিলে প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে, অভিনয় করবেন কে? উত্তর পাওয়ার পরের প্রশ্ন, তিনি কি পারবেন সালমানের মতো করতে?
মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র জীবনে সালমান শাহ খুব বেশি ছবিতে অভিনয় না করলেও যতটা করেছেন, মন দিয়ে করেছেন। দর্শকদের জন্য করেছেন। তাই তো দর্শকরা আজও তাকে ভুলতে পারেননি। আজও সালমান যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত সেখানে তার ভক্তরা নীরবে চোখের জল ফেলেন। আজও টেলিভিশনের পর্দায় তার অভিনীত ছবি প্রদর্শন হলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন দর্শকরা। আজও নতুন ছেলেরা সিনেমায় আসার স্বপ্ন দেখে সালমানের জন্য। এখানেই সালমান অনন্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বী ও চিরস্মরণীয়।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি স্মরণ করবে তাকে। শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, ‘সালমান শাহের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ৬ সেপ্টেম্বর এফিডিসিতে কোরআন খতম করানো হবে সকালে। দুপুরে দুস্থ মানুষদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে ও বিকেলে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।’
শিল্পী সমিতির আয়োজন ছাড়াও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও নানা অনুষ্ঠান প্রচার করবে সালমান শাহের মৃত্যু দিবসে।