সামুদ্রিক ঝড় টাইফুন জেবি মঙ্গলবার দুপুরের অল্প পরে দক্ষিণ-পশ্চিমের দ্বীপ শিকোকুর ওপর আঘাত হানে। এরপর আরও রুদ্রমূর্তি ধারণ করে হোনশু দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রচণ্ড বেগে প্রবাহিত হলে পুরো অঞ্চলের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। জেবি আঘাত হানার পূর্বাভাস আগে থেকে দেওয়া হচ্ছিল এবং কোনো কোনো এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও এ পর্যন্ত ৬ জনের প্রাণহানি এবং আরও প্রায় ১৬০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঝড়ের সঙ্গে আসা প্রবল বর্ষণে অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কিছু কিছু জায়গায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে। বন্যার পানিতে রানওয়ে প্লাবিত হলে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিমানবন্দরের সঙ্গে সংযোগ রক্ষার একটি সেতুর ওপর প্রচণ্ড বাতাসে গতিপথ হারিয়ে ফেলা তেলবাহী একটি ট্যাংকারের ধাক্কায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে বিমানবন্দরের সঙ্গে ওসাকার একটি এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিমানের ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় প্রায় হাজার তিনেক ভ্রমণকারী কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন। বিমানবন্দর কখন সচল হবে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো নিশ্চয়তা জাপানের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দিতে পারছেন না। রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কিছু বিমানের চারদিকে পানি জমে আছে।
জেবি হচ্ছে চলতি মৌসুমে জাপানে আঘাত হানা ২১তম সামুদ্রিক ঝড়। পানির উৎস হিসেবে টাইফুনকে জাপানে স্বাগত জানানো হলেও এ বছর ঝড়ের প্রচণ্ডতা মারাত্মক আকার নেওয়ায় মানুষ এখন জলবায়ুর পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি চিন্তিত। জেবি হচ্ছে ২৫ বছরের মধ্যে জাপানের ওপর আঘাত হানা প্রচণ্ডতম ঝড়। মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগে টাইফুন চিমারন পশ্চিম জাপানে প্রবল বর্ষণ নিয়ে আসে। এর আগে জুলাই মাসের শেষ দিকে হিরোশিমা ও ওকাইয়ামা জেলায় বর্ষণ থেকে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিলে বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল। ঝড় ছাড়াও প্রচণ্ড দাবদাহে চলতি গ্রীষ্মে জাপানে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তোলে।
পশ্চিম জাপান জেবির আঘাতে বিপর্যস্ত হলেও রাজধানী টোকিওসহ জাপানের পূর্বাঞ্চলে ঝড়ের বড় কোনো প্রভাব পড়েনি। টোকিওর সঙ্গে শহরতলির সংযোগ রক্ষার কয়েকটি লাইনে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হলেও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়া সত্ত্বেও রাজধানী সার্বিকভাবে ছিল ঝড়ের প্রভাবমুক্ত।