‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’— গর্জন। গ্যালারিতে লাল-সবুজ পতাকার সমারোহ। ১৫ হাজার দর্শকের প্রতীক্ষা। বাংলাদেশের ফুটবলে প্রায় বিস্মৃত এক দৃশ্যই যেন আজ ফিরে এসেছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। নিজেদের মাঠ আর দর্শকদের অনুপ্রেরণায় উজ্জীবিত বাংলাদেশের ফুটবলাররা হতাশ করেননি দর্শকদের। ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে সাফ সুজুকি কাপে দেশকে এনে দিয়েছেন সুন্দর শুরু। দুই অর্ধের শুরুতেই একটি করে গোল করেছেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ ও তরুণ ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল
এই তো কিছুদিন আগেই এশিয়ান গেমসে কাতারের বিপক্ষে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এশিয়াডে অংশ নেওয়া দলগুলোতে অনূর্ধ্ব-২৩ বছর বয়সী খেলোয়াড় বেশি থাকায় সেটি স্বীকৃত আন্তর্জাতিক ম্যাচের মর্যাদা পায় না। সে হিসেবে আজকের এই জয় ২০১৬ সালের জানুয়ারির পর পাওয়া বাংলাদেশের প্রথম জয়।
২০১৬ সালের অক্টোবরে থিম্পুতে এই ভুটানের কাছে হেরেই সর্বনাশের তলানিতে স্থান করে নিয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবল। আজ সে বিপর্যয়েরই যেন মধুর ‘প্রতিশোধ’ নিল বাংলাদেশ। যোগ্যতর দল হিসেবেই মোটামুটি দাপটের সঙ্গে খেলেই এসেছে এই জয়। গোটা ম্যাচে একবারের জন্যও বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে পারেনি ভুটান।
বাংলাদেশ হারবে না—এ বিশ্বাসটা নিয়েই মাঠে এসেছিল দর্শকেরা। সে বিশ্বাস পোক্ত হয় ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই। তপু বর্মণের পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় দল। ওয়ালি ফয়সালের কর্নার থেকে আসা বলে হেড করতে গেলে সাদউদ্দিনকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন ভুটানের ডিফেন্ডার। সেখান থেকে পাওয়া পেনাল্টিতেই ১-০ করেছেন সেন্টারব্যাক তপু।
পাঁচ মিনিট পরেই ২-০ করতে পারতেন মাহবুবুর রহমান সুফিল। কিন্তু মাসুক মিয়া জনির রক্ষণচেরা থ্রু নিয়ন্ত্রণে নিয়েও গোলপোস্ট ছেড়ে বের হয়ে আসা গোলরক্ষকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়াতে পারেনি সবে কুড়িতে পা রাখা সুফিল। কিন্তু সুফিল যে গোল করতে পারেন, সেটি আবারও প্রমাণ করেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। বদলি ইমন বাবুর লবে দুর্দান্ত ভলিতে জড়িয়েছেন জালে। এমন গোল দেখার জন্যই তো দর্শকদের মাঠে আসা।
শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়েই সাফ মিশন শুরু করল স্বাগতিক বাংলাদেশ। আগামী পরশু পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে জেমি ডের শিষ্যরা।
বাংলাদেশ একাদশ: শহিদুল আলম, বিশ্বনাথ ঘোষ, তপু বর্মণ, টুটুল হোসেন বাদশা, ওয়ালি ফয়সাল, জামাল ভূঁইয়া, আতিকুর রহমান ফাহাদ, মাসুক মিয়া জনি ( ইমন মাহমুদ বাবু) , বিপলু আহমেদ, সাদউদ্দিন ( ফয়সাল মাহমুদ / মামুনুল ইসলাম) , মাহবুবুর রহমান সুফিল