সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইদলিব প্রদেশে ‘বেপরোয়া’ হামলার প্রতিবাদে দেশটির সরকার এবং এর মিত্র রাশিয়া ও ইরানের জোটকে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘এই গুরুতর মানবিক ভুলের’ কারণে হাজারো মানুষ মারা যেতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও গতকাল সতর্ক করেছে, সিরিয়া সরকার বা তার মিত্ররা কোনো ধরনের রাসায়নিক হামলা চালালে ওয়াশিংটন এর জবাব দেবে।
সিরিয়ার বেশির ভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর এখন ইদলিবই বিদ্রোহীদের একমাত্র ঘাঁটি। এই ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী বড় ধরনের আগ্রাসী অভিযান চালাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জাতিসংঘের হিসেবে আল-নুসরা ও আল-কায়েদার প্রায় ১০ হাজার জঙ্গি ইদলিব দখল করে রেখেছে। সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পর্যায়ক্রমে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ট্রাম্পের আগে জাতিসংঘও এ বিষয়ে সিরিয়া ও তার মিত্র রাষ্ট্রগুলোকে সতর্ক করেছে। জাতিসংঘ বলছে, এ ধরনের হামলা হাজারো সাধারণ মানুষের জন্য বিপজ্জনক পরিণতি বয়ে নিয়ে আসবে।
জাতিসংঘে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি নিক্কি হেলেই টুইট করে বলেছেন, ‘ইদলিবে আসাদ, রাশিয়া এবং ইরানের দিকে সবার নজর। “#নোকেমিকেলউইপনস”।’
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ বলেছেন, সাধারণ মানুষকে মানববর্ম হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগে ইদলিব থেকে ‘সন্ত্রাসী’দের অবশ্যই মুছে দেওয়া হবে। সার্গেইয়ের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়ালেমও। তিনি অভিযোগ করছেন, বিদ্রোহীরা ইদলিবে রাসায়নিক হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে এ হামলার দায় সরকারের ঘাড়ে চাপে এবং যুক্তরাষ্ট্রও পাল্টা আঘাত হানার অছিলা পায়।
সিরিয়ায় জাতিসংঘের প্রতিনিধি স্তাফান দা মিসতুরাও সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সরকার যদি ইদলিবে হামলা চালায়, তাহলে তা ‘ভয়ংকর ঝড়ে’ রূপ নেবে। তিনি সেখানকার সাধারণ মানুষকে সরিয়ে সিরিয়ার অন্যত্র নিতে মানবিক করিডর তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন। জঙ্গিদের অবশ্যই নির্মূল করতে হবে। কিন্তু তা অবশ্যই হাজারো সাধারণ মানুষের জীবনের বিনিময়ে নয়।
সাত বছরের বেশি সময় ধরে সিরিয়ায় চলা গৃহযুদ্ধে চার লাখের বেশি মানুষ নিহত ও নিখোঁজ হয়েছে। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।