লাসিথ মালিঙ্গার ফেরা আর বিরাট কোহিল বিশ্রাম- এবারের এশিয়া কাপের দল ঘোষণায় এ দুটিই ছিলো সবচেয়ে বড় চমক। বাংলাদেশ দলে সাকিব আল হাসানের থাকা না থাকা নিয়েও ছিলো অনিশ্চিয়তা। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে এশিয়া কাপের পরই সাকিব আঙ্গুলের অস্ত্রপচার করাবেন।
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। এ টুর্নামেন্টের জন্য ইতোমধ্যেই দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে ছাড়াই যাবে এশিয়া কাপের শিরোপা ধরে রাখার মিশনে। দলকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিত শর্মা। তবে কোহলি না থাকলেও দলে আছেন নিয়মিত অন্য সব খেলোয়াড়। শেখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, দিনেশ কার্তিক, হার্দিক পান্ডিয়া কিংবা জাসপ্রিত বুমরাহরা ভারতকে সেরাদ দল প্রমাণ করতে পারবে বলে বিশ্বাস দেশটির নির্বাচকদের। নতুন মুখ হিসেবে দলে এসেছেন রাজস্থানের তরুণ বাঁ-হাতি পেসার খলিল আহমেদ।
পাকিস্তান দলে বিশেষ কোন চমক নেই। প্রত্যাশা মতোই সবাই সুযোগ পেয়েছেন দলে। বামহাতি অফস্পিনার ইমাদ ওয়াসিম অনেকদিন পর দলে ফিরেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর থেকেই দারুণ ফর্মে রয়েছে পাকিস্তান দলটি। জিম্বাবুয়ে সফরে দলটি অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়েকে বিধ্বস্ত করেছে। ফখর জামান ও ইমাম উল হকে উদ্বোধনী জুটিও এই মূহুর্তে দারুণ ফর্মে। বোলিংয়ে মোহাম্মাদ আমির, হাসান আলী আর মিডল অর্ডারে ব্যাট হাতে শোয়েব মালিকের ফর্ম দলটিকে আশার আলো দেখাচ্ছে।
এক বছর পর শ্রীলঙ্কা দলে ফিরেছেন লাসিথ মালিঙ্গা। নিঃসন্দেহে তা দলটির বোলিং ডিপার্টমেন্ট শক্ত করবে। তাকে সঙ্গ দেবেন সুরঙ্গা লাকমল। টপ অর্ডারে দারুণ ফর্মে আছেন কয়েকজন ব্যাটসম্যান। কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সাথে অভিজ্ঞ উপল থারাঙ্গা। অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও থিসারা পেরেরা ব্যাট বল- দুই ভুমিকাতেই দলকে জেতাতে সক্ষম।
মাশরাফির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল ওয়ানডেতে সব সময়ই দারুণ ছন্দে থাকে। তার ওপর কিছুদিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে তাদের হারিয়ে এসেছে দলটি। ওপেনার তামিম ইকবাল, অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আছেন দারুন ফর্মে। মিডল অর্ডারে দুই অভিজ্ঞ সেনানি মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লা রিয়াদের সাথে থাকবেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফর্মহীনতা ও শৃঙ্খলাজনিত কারণে এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়েছেন সাব্বির। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে নিজেকে মেলে ধরতে না পারায় ছিটকে গেছেন এনামুল। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন অলরাউন্ডার আরিফুল হক।
বোলিংয়ে অধিনায়ক মাশরাফির ধারাবাহিক ফর্ম আর মোস্তাফিজুর রহমানের জাদুকরী ডেলিভারি দলকে সাফল্য এনে দিতে সক্ষম হবে বলেই আশা সবার।
বাংলাদেশ দল: মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান ও আবু হায়দার রনি।
ভারত : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শেখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, আম্বাতি রাইডু, মানিশ পান্ডে, কেদার যাদব, মহেন্দ্র সিং ধোনি (উইকেটরক্ষক), দিনেশ কার্তিক, ভুবনেশ্বর কুমার, কুলদ্বীপ যাদব, যুযুবেন্দ্র চাহাল, অক্ষর প্যাটেল, শার্দুল ঠাকুর, খলিল আহমেদ, হার্দিক পান্ডিয়া ও জসপ্রিত বুমরাহ।
পাকিস্তান : ফখর জামান, ইমাম-উল হক, মোহাম্মদ হাফিজ, বাবর আজম, শোয়েব মালিক, হারিস সোহেল, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক), শাদাব খান, শান মাসুদ, আসিফ আলি, মোহাম্মদ নওয়াজ, ইমাদ ওয়াসিম, হাসান আলি, উসমান খান শেনওয়ারি, মোহাম্মদ আমির, জুনায়েদ খান, শাহেন শাহ আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফ।
শ্রীলঙ্কা : অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস(অধিনায়ক), কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, উপল থারাঙ্গা, দিনেশ চান্দিমাল, ধানুশকা গুনানথিলাকা। থিসারা পেরেরা, দাসুন শানাকা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভ, আকিলা ধনাঞ্জয়া, দিলরুয়ান পেরেরা, আমিলা আপোনসো, কাসুন রাজিথা, সুরঙ্গা লাকমল, দুশমান্থা চামিরা ও লাসিথ মালিঙ্গা।