বেলা তিনটার দিকে সাব্বির রহমান এলেন বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটির সামনে। শুনানি বলতে যে ছবিটা চোখে ভাসে, সেটি ঠিক নয়। সাব্বির ঢুকলেন আর বের হলেন। পরে বিষণ্ন মুখে বিসিবি থেকে বের হওয়ার সময় জানালেন, বেশি কিছু জানতে চাওয়া হয়নি তাঁর কাছে।
সাব্বিরের কী শাস্তির সুপারিশ করা হবে, সেটি বোধ হয় ঠিকই করে রেখেছিল বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি। তাঁকে হয়তো ডেকে শুধু জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে যেটি শৃঙ্খলা কমিটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমকেও। শৃঙ্খলা কমিটির পক্ষ থেকে বিসিবি পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেছেন, ‘আজ দুটি শুনানি ছিল। সিদ্ধান্ত বলব না, আমাদের সুপারিশ, যেটা বোর্ড সভাপতি বরাবর দেব। তিনি অনুমোদন দিলেই এটি কার্যকর হবে। সাব্বিরের শুনানিতে যেটা হয়েছে, ওকে আমরা ছয় মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছি।’
সাব্বির এবার শাস্তি পেয়েছেন ফেসবুকে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে। গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে করেছিলেন ১৫ রান। দ্বিতীয় ম্যাচের পর সাব্বিরের বর্তমান ফর্ম নিয়ে ফেসবুকে শ্লেষাত্মক মন্তব্য পোস্ট করেন এক ক্রিকেটপ্রেমী। সেই মন্তব্যে সাব্বিরকে (উল্লেখিত নামের অ্যাকাউন্ট) ট্যাগ করেন আরেক ভক্ত। এরপরই ‘সাব্বির রহমান রোমান’ নামে অ্যাকাউন্ট একটি বিতর্কিত খুদে বার্তা পাঠানো হয়। ওই সমর্থকের দাবি, সাব্বির তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ফেসবুক বার্তা পাঠিয়েছেন। এটি পরে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সাব্বিরের শাস্তি নিয়ে ইসমাইল হায়দার বলেছেন, ‘সম্প্রতি ফেসবুকের একটা বিষয় নিয়ে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ও অবশ্য বলছে, এটা হ্যাকড হয়েছিল। এই মুহূর্তে আমরা এটা যাচাই করতে পারছি না। তবে তার সর্বোপরি কার্যকলাপ বিবেচনা করে শাস্তিটা দেওয়া হয়েছে। আগের ঘটনায় সে তো শাস্তি পেয়েছেই। এখন শাস্তিটা এসেছে ছয় মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ।’
জাতীয় লিগে ম্যাচ চলাকালে মাঠে এক কিশোর দর্শককে মারধর করার অভিযোগে গত জানুয়ারিতে শাস্তি হিসেবে বিসিবি সাব্বিরকে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার সঙ্গে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করে। তাঁকে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে। আগামী মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে অসুবিধা না থাকলেও দীর্ঘদিনের জন্য জাতীয় দলের দরজা বন্ধ সাব্বিরের সামনে।
ইসমাইল অবশ্য জানালেন, সাব্বির অনেক কিছু স্বীকার করেছেন এবং নিজের কার্যকলাপের জন্য অনুতপ্ত। অনুতপ্ত হলেও বিসিবি যে সাব্বিরকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সেটিই বললেন ইসমাইল, ‘ফেসবুকের একটা স্ট্যাটাসের জন্য ছয় মাস শাস্তি আমরা অনেক বড় মনে করছি। ভবিষ্যতে এমন আর কোনো কার্যকলাপ যদি নজরে আসে, তাহলে লম্বা সময়ের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারে সাব্বির। নিজেকে সংশোধন না করলে বড় শাস্তি সে পাবেই।’