ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বিরোধের জের ধরে নিজস্ব পৃথক স্যাটেলাইট ব্যবস্থা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন। ব্রেক্সিটের পর ইউরোপের গ্যালিলিও স্যাটেলাই ব্যবস্থায় সমান সুযোগ পাবে না এমন আশঙ্কা থেকে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে। বুধবার এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
বিশ্বব্যাপী নজরদারি, যোগাযোগ এবং কোনো কিছুর অবস্থান চিহ্নিতকরণের কাজে ব্যবহৃত হয় স্যাটেলাইট প্রযুক্তি। এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল পজিশনিং সিস্টেম(জিপিএস) এর উপর আর নির্ভর না করার পরিকল্পনা থেকে ২০০৩ সালে ‘গ্যালিলিও’ নামে নিজস্ব নতুন স্যাটেলাইট প্রকল্প হাতে নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ২০২১ সালে এর কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। সব কিছুই ঠিক মতো চলছিলো। তবে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে- ব্রিটেন ইইউ থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার(ব্রেক্সিট) পর তারা গ্যালিলিওর স্পর্শকাতর বিষয়ে(সরকারি ও সামরিক কাজে ব্যবহৃত উপাদান) প্রবেশাধিকার পাবে না। এ নিয়েই শুরু বিরোধের।
ফলে ব্রিটেন গ্যালিলিওর মতো প্রকল্পের মতো নিজস্ব একটি স্যাটেলাইটব্যবস্থা স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রকল্পের ব্যয়, সময়, সক্ষমতা যাচাইসহ আনুষঙ্গিক সম্ভবতা যাচাইয়ে ৯২ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ দিয়েছে দেশটির সরকার।
ইউকে স্পেস এজেন্সি এক বিবৃতিতে বলেছে, ব্রিটেন সরকার স্পষ্টভাবেই বলে আসছে তারা গ্যালিলিও প্রকল্পে সম্পূর্ণভাবে যুক্ত থাকতে চায়। কিন্তু ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলো ‘বর্তমান ও ভবিষ্যতে’ এ প্রকল্পের সমান অংশীদার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবে, এমন নিশ্চয়তা ছাড়া ও সামরিক কাজে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাবিষয়ক তথ্যে সমান সুযোগ না পেলে এ প্রকল্প থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হবে।
ইউরোপিয়ান কমিশন এবং ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’ গ্যালিলিও প্রকল্প হাতে নেয় ২০০৩ সালে। ইইউয়ের সদস্য দেশগুলো এর সমান অংশীদার। ২৪টি আলাদা স্যাটেলাইটের সমন্বয়ে পুরো সিস্টেম গড়ে উঠবে। ব্যাকআপ হিসেবে থাকবে আরও ছয়টি অতিরিক্ত স্যাটেলাইট। ইতিমধ্যে ২৬টি স্যাটেলাইট স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২১ সাল নাগাদ বাকি চারটি স্যাটেলাইট প্রেরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা।
গ্যালিলিও প্রকল্পে ব্রিটেন এ পর্যন্ত প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে, যা তারা ফেরত চাইবে। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ইইউয়ের সাথে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ কার্যকর হবে বলে দিনক্ষণ ঠিক করা আছে।