কক্সবাজার পৌরসভার সড়কগুলোতে আজ ঈদের দিন সকালে জবাই হয়েছে হাজারো কোরবানির পশু। রাজপথ হয়ে পড়েছিল পশুর রক্তে লাল। দুপুর নাগাদ ছড়াতে থাকে দুর্গন্ধ। লোকজন নাক চেপে হাঁটতে শুরু করছিল। মুহূর্তে রাস্তায় নেমে পড়েন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা শুরু করেন কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের কাজ। পথচারীরা ছাত্রলীগের এই কর্মকাণ্ডে উচ্ছ্বসিত।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ বলেন, মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পাশাপাশি ছাত্রলীগ ব্যতিক্রমধর্মী কিছু কাজ করছে। আজ কোরবানির ঈদের দিন পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক কিলোমিটার সড়কে কোরবানির পশুবর্জ্য অপসারণ করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এর আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক পারাপারের জন্য সড়কে ১০টি জেব্রাক্রসিং স্থাপন করে ছাত্রলীগ।
আজ দুপুর ১২টার দিকে পৌরসভার বিমানবন্দর সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্রলীগের ১০-১৫ জন নেতা-কর্মী পশুবর্জ্য অপসারণ করছেন। কেউ দূরের নলকূপ থেকে বালতিতে করে নিয়ে আসছেন। কেউ সেই পানি সড়কের ওপর ঢেলে দিচ্ছেন। আর কয়েকজন সড়কের পশুর রক্ত পরিষ্কার করছেন। পথচারীরা অবাক দৃষ্টিতে অপসারণ কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছেন।
ঘটনাস্থলে জেলা ছাত্রলীগের উপদপ্তর সম্পাদক মইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রামে খোলা জায়গায় পশু জবাই হলেও শহরের সংকীর্ণ এলাকায় পশু জবাই হয়েছে রাস্তার ধারে, পথের ওপর। কক্সবাজার পৌর শহরেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। বর্জ্যগুলো তৎক্ষণাৎ অপসারণ হয়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তাপ বাড়ায় দুর্গন্ধ ছড়ানো শুরু করে বর্জ্যগুলো। এতে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছিল। তাই বর্জ্য অপসারণে নেমে গেল ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের নেতারা বলেন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শিডিউল মোতাবেক উপসড়কগুলোতে বর্জ্য অপসারণ করে। কোথাও সকালে, কোথাও বিকেলে। ততক্ষণে সবখানে ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ। বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ। এতে শহরের নাগরিকেরাও দায়িত্ব পালন নিয়ে সচেতন হয়েছে।
দেখা গেছে, পশু জবাই করা স্থানগুলো পরিষ্কার করে সেখানে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দুর্গন্ধমুক্ত করার চেষ্টা করছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা৷ বিমানবন্দর সড়ক হিসেবে এটি ভিআইপি এলাকা। ঈদ উপলক্ষে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা বিমান থেকে নেমে এ সড়ক দিয়েই সমুদ্রসৈকত এলাকার হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউসে যান। বর্জ্যের দুর্গন্ধে পর্যটক এবং স্থানীয়দের নাকে রুমাল দিয়ে চলতে হয়।
কক্সবাজারের পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগ পশুবর্জ্য অপসারণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। পর্যটন নগরীর বাসিন্দা হিসেবে নিজ এলাকা পরিষ্কার রাখতে পৌরসভার পাশাপাশি নিজেদেরও যে দায়িত্ব রয়েছে, সেটাই তারা প্রমাণ করেছে।
পৌর মেয়র বলেন, পৌর এলাকার ১২টি ওয়ার্ডের ৬১ স্থানে এবার কয়েক হাজার কোরবানির পশু জবাই হয়েছে। এর বাইরেও কিছু কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে পশু জবাই হয়েছে। সেসব এলাকাতেও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্য অপসারণ করছেন।