ডেনমার্কের পুলিশ গতকাল শুক্রবার রাজধানী কোপেনহেগেনের একটি শপিং মলে মুখাবয়ব আবৃত নিকাব পরার দায়ে ১০০০ ক্রোনা বা ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। ১ আগস্ট থেকে ডেনমার্কে পাবলিক চত্বরে নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর এই প্রথম জরিমানার ঘটনা ঘটল।
কোপেনহেগেনের পুলিশ জানিয়েছে, রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে হরসহোলমের একটি শপিং মলে ২৮ বছর বয়স্ক একজন নারী মুখাবয়ব আবৃত নিকাব পরে এলে পুলিশ তাঁকে জরিমানা করে। তবে সঙ্গে সঙ্গে জরিমানা আদায় না করে পুলিশ জরিমানার চিঠিটি ওই নারীর বাড়ির ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছে। শপিং মলে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই মুখাবয়ব আবৃত নিকাব পরিহিত নারীটির সঙ্গে অপর এক নারীর কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। তবে নিকাববিরোধী নারীটি জোর করে নিকাব খুলতে চেয়েছিলেন কি না, পুলিশ তা ভিডিও ফুটেজে খতিয়ে দেখবে। প্রকাশ্য জায়গাই ঝগড়া করে এই দুই নারী শান্তি ভঙ্গ করেছেন কি না, পুলিশ তা তদন্ত করছেন।
ডেনিশ সংবাদমাধ্যম রিটজাউ শুক্রবার জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষে ডেনমার্কের পার্লামেন্টে প্রকাশ্য স্থানে মুখাবয়ব আবৃত নিকাব পরা নিষিদ্ধ আইনটি ৭৫-৩০ ভোটে পাস হওয়ার পর ১ আগস্ট থেকে তা আইনে পরিণত হয়েছে। নতুন আইনটিতে পুরো শরীরে বোরকা, মুখাবয়ব আবৃত নিকাব এবং কোনো ধরনের মুখোশ ও নকল দাড়িসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনে বোরকা, মুখাবয়ব আবৃত নিকাব পরিহিত কোনো নারীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে এবং তাঁকে প্রকাশ্য স্থান ত্যাগের নির্দেশ দিতে পারবে। অবশ্য শীতের তীব্র প্রকোপের ফলে মাফলার, মুখঢাকা টুপি বা কার্নিভাল উৎসবে মুখোশ ও নকল দাড়ির বিষয়গুলো এই নিষিদ্ধ আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
ডেনমার্কের নতুন আইনটি নিয়ে দেশটিতে বেশ সমালোচনা রয়েছে। সমালোচকেরা বলেছেন, যথেষ্ট খোঁজখবর না নিয়েই আইনটি পাস করা হয়েছে। অর্ধকোটির কিছু বেশি জনসংখ্যা-অধ্যুষিত দেশটিতে ২০১০ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ২০০-শর কিছু বেশি নারী ডেনমার্কে বোরকা ও মুখাবয়ব আবৃত নিকাব পরিধান করেন।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলমান-অধ্যুষিত দেশ ফ্রান্স প্রথম ২০১১ সালে মুখাবয়ব আবৃত নিকাব পরিধান নিষিদ্ধ করে। এরপর বিগত বছরগুলোতে হল্যান্ড, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া এবং এখন ডেনমার্কে এই আইন বলবৎ হলো।