ভারতের আসাম রাজ্যে নতুন প্রকাশিত নাগরিকপঞ্জীতে ৪০ লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়ার প্রতিবাদ জানাতে যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদলকে শিলচর বিমান বন্দরে আটকে রেখেছে পুলিশ।
তৃণমূল কংগ্রেসের আট সদস্যের ওই দলটিতে কয়েকজন মন্ত্রী ও সাংসদ রয়েছেন।
আসাম পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি মুকেশ আগরওয়াল বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ৮ জন মন্ত্রী সাংসদকে তার ভাষায় ‘প্রিভেনটিভ ডিটেনশন’ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যেহেতু কাছাড় জেলায় আগের রাত থেকেই ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে, তাই শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবার আশংকায় তাদেরকে বিমানবন্দরের মধ্যেই আটক রাখা হয়েছে।
ভারতের জাতীয় নাগরিক তালিকা থেকে ঐ রাজ্যের ৪০ লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়ার ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলটি সেখানে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখার জন্য শিলচর যান।
সংবাদদাতারা বলছেন, দৃশ্যত তৃণমূলের এই দলটি যেন শিলচরে এসে সমাবেশ করতে না পারেন বা এখানকার বাংলাভাষীদের সাথে কথা বলতে না পারেন সে জন্যই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদের মধ্যে আছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী সিরাদ হাকিম, লোকসভা সদস্য সুখেন্দুশেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, মমতাবালা ঠাকুর, অর্পিতা ঘোষ, নাদিম-উল হক, রত্না দে-নাগ, এবং রাজ্য বিধানসভা সদস্য মহুয়া মৈত্র।
তাদের কাউকেই শিলচর বিমানবন্দরের বাইরে যেতে দেয়া হয় নি। এ নিয়ে পুলিশের সাথে তাদের চিৎকার-চেঁচামেচি হয়, কিছুটা হাতাহাতিও হয় ।
মি. আগরওয়াল জানান, এই মন্ত্রী-এমপিরা রাতে বিমানবন্দরের ভেতরেই থাকবেন।
এ রাজ্যের সদ্য প্রকাশিত জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়া থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ার পরও সেখানে তেমন কোন প্রতিবাদ-বিক্ষোভ বা অস্থিরতার ঘটনা ঘটেনি।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এটা তুলে ধরতে চান যে এনআরসিতে বাদ পড়া ৪০ লাখ লোক যাদের অধিকাংশই বাংলাভাষী হিন্দু ও মুসলমান – তাদের স্বার্থরক্ষায় তিনি পাশে দাঁড়াচ্ছেন – যাতে এই রাজ্যের ৯৯ শতাংশ বাংলাভাষী অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় তার পক্ষে একটা সমর্থন তৈরি হয়।
এ ছাড়া তার নিজ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেও ‘বাঙালিদের জন্য মমতা ব্যানার্জি লড়াই করেন’ এমন একটা ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চান তিনি।