নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম ওসমান বলেছেন, সেপ্টেম্বরের পর থেকে খেলা শুরু হবে। আবার সব এক হবে। বাম-ডান চোর-বদমায়েশ সব। তাদের টার্গেট একজন। তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন খেলা হবে প্রথমে প্রথম রাউন্ড, পরে কোয়ার্টার ফাইনাল, পরে সেমি ফাইনাল।
কিন্তু আমরা তখন খেলা দেখবো না। আমরাও তখন মোকাবিলা করবো। ইনশাআল্লাহ নারায়ণগঞ্জেই সবচেয়ে বেশি খেলা হবে। আমরা যেদিন ক্ষমতা ছাড়বো সেদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হবে। সেদিন আমরা আওয়াজ তুলবো, আমরা শেখ হাসিনার কর্মীরা খেলবো। আর ছাড় দিব না।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে বন্দরে নাসিকের ২৩নং ওয়ার্ডের খানবাড়ি মোড়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শামীম ওসমান বলেন, অনেকেই ভাবছেন সামনে বোধহয় ওয়ান টু থ্রি ফোর হবে। কিন্তু আসলে সেটা হবে না। যারা জামায়াতের পত্রিকা পড়ে রাজনীতি করেন তারা ভুল পথে হাঁটছেন। অনেকের মধ্যে আমাদেরও কেউ কেউ আছে।
এটা বলতে চাই আগামীতে আবারো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে কিছু জামায়াতের পত্রিকায় লিখে বন্দরে নাকি আওয়ামী লীগ নাই। বন্দরে নাকি আওয়ামী লীগের কর্মী নাই। আজকে এই অনুষ্ঠানে এতো মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে কথাটা কতোটা মিথ্যা। অনেকে ভাবতে পারে আমি এখানে আমার ভাই সেলিম ওসমানের শক্তি বৃদ্ধি করতে আসছি। আমি বন্দরে সেলিম ওসমানের শক্তি বৃদ্ধি করতে আসি নাই। আমি সেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি যে ১৬ই জুন বোমা হামলার পরেও পিছিয়ে যাই নাই।
তিনি বলেন, বন্দরে আওয়ামী লীগ নাই, আমাদের কেউ কেউ সেটা বলে আসছে তাদের স্বার্থের জন্য। আর পত্রিকাগুলোও বিভেদ সৃষ্টি করতে সেগুলো লিখে থাকে। কিন্তু আজকে এই বৈরী আবহওয়াতেও যেভাবে লোকজন উপস্থিত হয়েছেন, তাতে তো মনে হয় পুরো আওয়ামী লীগই বন্দরে আছে।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেনের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রমুখ।
আরো পড়ুন : রাষ্ট্র ক্ষমতা নিয়ে পাগল হয়ে যাবার কারণ নেই : ড. কামাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, রাষ্ট্র ক্ষমতা নিয়ে পাগল হয়ে যাবার কোনো কারণ নেই। সত্তর বছরের ইতিহাসে পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখুন- এটা কি চিরস্থায়ী?
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় ড. কামাল হোসেন একথা বলেন।
‘কয়লা চুরি, ব্যাংক ডাকাতি, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি বন্ধ করে ভোটাধিকার গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় তিনি আরো বলেন, ক্ষমতা কি চিরস্থায়ী? ক্ষমতা থাকলেই কি যা ইচ্ছা তাই করবে? মুখে যা ইচ্ছে তা-ই বলা হবে। এটা হয় না।
তিনি সবাইকে সর্তক করে দিয়ে বলেন, যে যেখানে আছেন ঠান্ডা মাথায় দায়িত্ব পালন করুন।
তিনি বলেন, ‘আমি কারো বিরুদ্ধে কিছু করতে চাই না। আবেদন করবো সুস্থ হোন। দেশের সার্বিক মঙ্গলের জন্য। কারণ দেশের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। এটাকে ধ্বংস করতে দিবেন না। আমি এখন আবেদনের সুরে বলছি। কিন্তু জনগণ জেগে উঠলে তারা আবেদনের সুরে বলবে না।’
তিনি বলেন, দেশকে বাঁচাতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা চাই বৃহত্তর ঐক্য। যারা দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, ষড়যন্ত্র করেছে তাদের বাদ দিয়ে সব জনগণকে নিয়ে ঐক্য হবে। আমি জীবনের শেষ পর্যন্ত এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় থাকব।
ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, ক্ষমতার মসনদে বসার জন্য নয়, দেশকে রক্ষার জন্য ঐক্য করবো।
তিনি বলেন, ছাত্রসমাজের ওপর লাঠি তোলা কত বড় অন্যায় তা তারা চিন্তাও করতে পারছে না। তিনি জানতে চান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে করা হাতুড়ী দিয়ে আহত করা হয়েছে। কিন্তু ওই ছাত্র কি অন্যায় করেছে যে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পা ভেঙ্গে দিতে হবে? সে তো সংস্কার চেয়েছে,আর তো কিছু করেনি।
ড. কামাল ক্ষুদ্ধ কন্ঠে বলেন, কে তার পা ভাঙ্গলো, কোথায় ওই হাতুড়ি? তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ওই হাতুড়ি সিজ বা জব্দ করা হয়েছে কি-না?। তিনি বলেন, কারা এ হাতুড়ি তুলে দিয়েছে তাদের হাতে? কারা এদের মাথা খারাপ করে দিচ্ছে?
তিনি বলেন, আসুন সবাই মিলে ওদের জন্য দোয়া করি। আমি তাদের ক্ষতি হোক চাই না। আমি চাই তারা মানসিকভাবে সুস্থ হোক। তাদের লাঠি হাতে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কারা দখল করাচ্ছে? যারা করাচ্ছে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ.ব.ম মোস্তাফা আমীনসহ ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মুহাম্মদ মনসুর, গণফোরাম নেতা মোশতাক আহমেদ, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি প্রমুখ।