রাশিয়া বিশ্বকাপটা দাগ রেখে গেছে সবার মনে। এতটা জমজমাট বিশ্বকাপ শেষ কবে দেখা গেছে? সেমিফাইনালের আগেই সম্ভাব্য সব তারকার বিদায়, সম্ভাব্য বিশ্বকাপজয়ীরাও বাদ পড়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। তবু আগ্রহের পারদ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চূড়ায় ছিল সবার। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছেন নেইমার। এবার ছিল নিজেকে মেসি-রোনালদোর কাতারে নিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু চোট থেকে ফেরা নেইমার বিশ্বকাপে আলোচনা জমিয়েছেন অতি-অভিনয় করে, আহত হয়ে মাঠে গড়িয়ে।
এ নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। ‘নেইমার চ্যালেঞ্জ’ নামে মাঠে গড়ানোর প্রতিযোগিতাও চলেছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। এসব নিয়ে এত দিন কোনো কথা বলেননি নেইমার। অবশেষে পিএসজি ফরোয়ার্ড মুখ খুললেন এ নিয়ে। একটি স্পনসরের বিজ্ঞাপন করতে এসে অতি-অভিনয়ের দায় মেনে নিয়েছেন নেইমার। সেই সঙ্গে ঘুরে দাঁড়ানোরও প্রতিজ্ঞা করেছেন সে বিজ্ঞাপনে। দীর্ঘ সংলাপে নেইমার বলেছেন :
‘হাঁটুতে বুটের আঘাত। মেরুদণ্ডে লাথি। পা মাড়ানো।’
‘আপনারা হয়তো ভাবেন আমি অতি অভিনয় করি এবং মাঝেমধ্যে আমি সেটা করি। কিন্তু সত্যি হলো মাঠে আমাকে অনেক ভুগতে হয়। বাইরে থেকে আপনারা ধারণাও করতে পারবেন না কীসের মধ্য দিয়ে যাই আমি। আমি যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলে বিদায় নিই, এর মানে এই নয় যে আমি শুধু জিততে ভালোবাসি বরং এ কারণে যে আমি এখনো হতাশ করতে শিখিনি।’
‘আমাকে দেখে দুর্বিনীত মনে হতে পারে, এর মানে এই নয় যে আমি বখে যাওয়া ছেলে। এর মানে আমি এখনো হতাশা মেনে নিতে শিখিনি। আমার মধ্যে এখনো একটি বালক লুকিয়ে আছে। মাঝেমধ্যে এর আলোয় বিশ্ব চমকে যায়, অন্য সময় সবাই বিরক্ত হয় এবং এ বালককে বাঁচিয়ে রাখতে আমি লড়ব, তবে সেটা আমার মধ্যেই মাঠের মধ্যে নয়।’
‘আপনাদের মনে হতে পারে আমি মাঠে অনেক বেশি পড়েছি। কিন্তু সত্য হলো আমি পড়িনি, আমি ভেঙে চুরমার হয়ে গেছি এবং আমার সদ্য অপারেশন করা গোড়ালি মাড়িয়ে দেওয়ার চেয়েও বেশি ব্যথা এতে। আমি আপনাদের সমালোচনা গ্রহণ করতে একটু সময় নিয়েছি। এ সময়ে আমি আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়েছি এবং নতুন এক মানুষে পরিণত হয়েছি। কিন্তু এখন আমি এখানে, সবার সামনে নিজেকে উন্মুক্ত করে দিচ্ছি।’
‘আমি পড়ে গিয়েছি। কিন্তু তারাই উঠে দাঁড়ায়, যারা পড়েছে। আপনারা চাইলে আমার দিকে পাথর ছুড়ে মারা চালিয়ে যেতে পারেন অথবা সেগুলো অন্যদিকে ফেলে দিয়ে আমাকে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করতে পারেন। কারণ, আমি যখন উঠে দাঁড়াই, পুরো দেশ সেই সঙ্গে উঠে দাঁড়ায়।’