বরিশালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে একাধিক কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাউনিয়ার সৈয়দা মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বের হয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার এ অভিযোগ করেন।
এ সময় বিএনপি প্রার্থী বলেন, একাধিক কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের ধানের শীষের এজেন্ট সাজিয়ে কেন্দ্রে বসানো হয়েছে। কাউনিয়ার সৈয়দা মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এরকম একজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলার কথাও জানান সরোয়ার। পরে প্রশাসন তাকে ছেড়ে দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, কেন্দ্রের বাইরে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার বাহিনী পাহারা দিচ্ছে। এতে সাধারণ ভোটারদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। নীরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী যেকোনো ভাবে ভোটের ফলাফল তার পক্ষে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তবে ভোটাররা যদি ৪টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারেন ভোট গণনায় তিনি এগিয়ে থাকবেন বলেও জানান বিএনপির এ মেয়র প্রার্থী।
এদিকে সকাল ৮টায় সরকারি বরিশাল কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। কেন্দ্রের প্রথম ভোটটি দেন তিনি।
ভোট প্রদান শেষে সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন তা মেনে নেব। নির্বাচনে যেই জয়লাভ করবে তাকে সহায়তা করব।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন দেখে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে। জাতীয় পার্টি এরই মধ্যে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে। ভোট সুষ্ঠু হবে না এমন অভিযোগ ঠিক নয়। জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছে। বিজয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।
অপরদিকে বাসদ মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, সরকারি বলিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে একাধিক ব্যালটে আগে থেকেই সিল মারা দেখে প্রতিবাদ করলে তাকে লাঞ্ছিত করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া নগরীর দিয়াপাড়া, দত্তপাড়া ও বিসিক এলাকার কয়েকটি কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাসদ মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন কমিউনিস্ট পার্টির মেয়র প্রার্থী একে আজাদ।
তবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, নির্বাচন কমিশন এ ধরনের কোনো অভিযোগ এখনও পায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য সোমবার সকাল ৮টা থেকে বরিশালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন নগরবাসী।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৯৪ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবার ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন।
নগরীতে ১২৩টি কেন্দ্রের ৭৫০টি বুথে বিরামহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। এরমধ্যে ৪টি ওয়ার্ডের ১টি কেন্দ্রে ৭৮টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম পদ্ধতিতে।