বার্সেলোনা-ব্রাজিল নামের মধ্যেই মিল পাওয়া যায়। আর যদি সম্পর্কের কথা বলেন, তা হলে তো খুবই মধুর। সে সম্পর্কের দাম অর্থমূল্য দিয়ে বিচার করা হলে তার দাম পড়বে ৫০০ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি। কারণ সব মিলিয়ে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার কিনতে বার্সেলোনা এখন পর্যন্ত খরচ করেছে ৫৪৩ মিলিয়ন ইউরো।
এই মৌসুমে বার্সেলোনায় দুই ব্রাজিলিয়ান নাম লিখিয়েছেন। আর্থার ও ম্যালকম। দুজনকে দিয়ে বার্সার জার্সি গায়ে চড়িয়েছেন ব্রাজিলের এমন খেলোয়াড়ের সংখ্যা ৩৫ পূর্ণ করল। ১৯৩১ সালে মিডফিল্ডার ফাউস্তো আর জাগুয়ারে ধারে এক মৌসুমের জন্য খেলতে এসেছিলেন এই ক্লাবে। এই দিয়ে যাত্রাটা শুরু। ১৯৪৭ সালে উইঙ্গার লুসিদিও বাতিস্তা ছিলেন বার্সায় স্থায়ী চুক্তি করা প্রথম ব্রাজিলিয়ান। বার্সায় খেলা প্রথম ব্রাজিল তারকা ছিলেন এভারিস্তো ডি মাসেদো। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত খেলা মাসেদো বার্সার হয়ে ২২৬ ম্যাচে ১৭৮ গোল করেছিলেন। ১৯৫৯ ও ১৯৬০ সালে টানা দুবার লিগ জেতা মাসেদোর সবচেয়ে বড় কীর্তি অবশ্য ইউরোপিয়ান কাপে। ১৯৬০ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ইউরোপিয়ান কাপে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিল তাঁর গোলেই।
এরপর আরও অনেক ব্রাজিলিয়ানই বার্সেলোনার জার্সি গায়ে চড়িয়েছেন। মহাতারকাদের মধ্যে ১৯৯৩ সালে রোমারিও আসেন এই ক্লাবে। বার্সার জার্সিতে খেলেছেন রোনালদো, রিভালদো ও রোনালদিনহোর মতো ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি। সর্বশেষ তারকা ছিলেন নেইমার৷ বর্তমানে আছেন আরেক উদীয়মান তারকা ফিলিপ কুতিনহো।
কুতিনহোর সঙ্গে আর্থার ও ম্যালকম—এই তিনজনকে কিনতেই বার্সাকে খরচ করতে হয়েছে ১৯২ মিলিয়ন ইউরো। তাতেই অঙ্কটা ৫০০ মিলিয়নের ঘর ছাড়িয়েছে। বার্সা ও ব্রাজিলের সম্পর্কটা আরও পোক্ত হয়েছে। স্পেনের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটিতে খেলেছেন ব্রাজিলিয়ান জিওভানি, সনি অ্যান্ডারসন, এডমিলসন; যাঁর কথা না বললেই নয়, রাইট ব্যাক দানি আলভেস।
আবার একটি কালো দিকও আছে। বার্সায় ব্রাজিল তারকাদের শেষটা বেশির ভাগ সময় ইতিবাচক কিছু হয়নি। রোমারিও, রিভালদো ও রোনালদিনহোরা দীর্ঘ সময় থাকতে পারেননি এই ক্লাবে। সর্বশেষ নেইমারও বার্সা ছেড়েছেন বহু নাটকের মধ্যে দিয়ে। পাওলিনহোকে এক মৌসুমের জন্য কিনে এনে আবার বেচে দিয়েছে বার্সা।
অবশ্য লিভারপুলে ভালোবাসার সমুদ্র ছেড়ে আসা কুতিনহোকে ভালোভাবেই বরণ করে নিয়েছে ক্লাবটি। আর্থার ও ম্যালকমকেও তা-ই। ব্রাজিল-বার্সা সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় এঁরা রচনা করবেন, এটাই সমর্থকদের প্রত্যাশা।