বিজেপির সাথে জোট গড়া মস্তবড় ভুল ছিলো বলে স্বীকার করেছেন জম্মু ও কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। শনিবার দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠানে এক বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
গত মাসে ক্ষমতা ছাড়ার পর এদিনই প্রথম কোন প্রকাশ্য বক্তৃতা করলেন মেহবুবা মুফতি। তার পিতার গড়া দল পিপলস ডেমোক্র্যাটক পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, শুরু থেকেই বিজেপির সাথে জোট গড়ার বিরোধীতা করেছি; কিন্তু বাবা আমার কথা শোনেননি। মেহবুবা বলেন, বাবার যুক্তি ছিলো এই জোট কাশ্মিরের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য নয়, কাশ্মিরাবসীর ভোগান্তি দূর করার জন্য।
বিজেপির সাথে রাজ্য সরকার গঠনের এক বছর পর মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মোহাম্মদ সাইদ মারা যান। এরপর মুখ্যমন্ত্রী হন তার মেয়ে মেহবুবা মুফতি। সে প্রসঙ্গে মেহবুবা বলেন, আমার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে ছিলো না; কিন্তু বাবার সিদ্ধান্তকে সামনে এগিয়ে নিতে এর বিকল্প ছিলো না।
২০১৬ সালের মার্চে ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মিরের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন মেহবুবা মুফতি। দুই বছর রাজ্য শাসন করার পর বিজেপির সাথে বিরোধে গত মাসে জোট ভেঙে যায়। মূলত বিজেপিই তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নিলে ভেঙে যায় জোট সরকার।
মেহবুবা মনে করেন কাশ্মিরে কেন্দ্রিয় বিজেপি সরকারের দমন নীতির কারণে স্থানীয়ভাবে তার দলের জনসমর্থন কমেছে। দিল্লির বিজেপি সরকার শুরু থেকেই কাশ্মিরবাসীর ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে। যে কারণে রাজ্যে বিজেপির সাথে মেহবুবার দলের জোট মেনে নিতে পারেনি সাধারণ কাশ্মিরিরা।
২০১৫ সালে বিজেপি ও পিডিপির এই জোটকে ‘অপবিত্র জোট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলো কংগ্রেস। যা কাশ্মিরে একটি রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। কাশ্মিরের স্থানীয় দলগুলোও শুরু থেকেই এই জোটকে উপত্যকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য দায়ী করে আসছে। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর বক্তৃতায় মেহবুবা বলেছেন, এসব পরিস্থিতি মোকাবেলা করা তার জন্য সহজ ছিলো না। বিজেপির সাথে জোট গড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা ছিলো নিজ হাতে বিষপান করার মতো’।
তবে মেহবুবার দাবি কাশ্মির বিষয়ে বিজেপিকে অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে তারা ঠেকিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, তার সরকারের কারণেই কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা আইন পরিবর্তন করতে পারেনি। পাকিস্তানের নতুন সরকারের সাথে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে অগ্রসর হওয়ার জন্য তিনি নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।