শনিবার , ২৮ জুলাই ২০১৮ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

সিলেট ছাড়া সেলিম মামলা-গ্রেপ্তারে চাপে বিএনপি

প্রতিবেদক
alltimeBDnews24
জুলাই ২৮, ২০১৮ ১:২৯ পূর্বাহ্ণ

দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। এ কারণে পদ হারিয়ে ছিলেন। পরে কারাবাসে থাকা চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। ফেরত পান দলীয় পদও। ওই সময় তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, দলীয় প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে কাজ করার।

কিন্তু  এরপর থেকেই পর্দার আড়ালে চলে যান সেলিম। তার অনুসারীরা বর্তমানে আরিফের পক্ষে কাজ করলেও নির্বাচনী মাঠে তিনি একাই অনুপস্থিত।

তবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও আলোচনা পিছু ছাড়েনি তার। রাজনীতির মাঠে সরব এই নেতার হঠাৎ নীরবতা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। সেলিম কোথায়? দল এবং দলের বাইরে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তথ্যমতে, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান বর্তমানে সিলেট ছাড়া। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপ ছিল তার ওপর। গ্রেপ্তারও হতে পারতেন। এমন আশঙ্কা থেকেই তিনি সিলেট ছেড়েছেন। আরেকটি সূত্র মতে, তিনি দেশই ছেড়েছেন। গতকাল শাহী ঈদগাহ এলাকার মীর হাজারীবাগে সেলিমের বাড়িতে গিয়েও তার কোনো স্বজনকে পাওয়া যায়নি। বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী জানিয়েছে, তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে ৫-৬ দিন আগে গেছেন। আর ফিরে আসেননি। এদিকে সেলিম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে প্রচণ্ড চাপে পড়েছে বিএনপি। দিনদিন এই চাপ বাড়ছেই। দলটির অভিযোগ, সেলিমকে নির্বাচনী মাঠে ব্যবহার করতে না পেরে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন দমন-পীড়নের পন্থা বেছে নিয়েছে। পরিকল্পিতভাবে নানা ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মেয়র পদে মনোনয়ন দেয় গতবারের মেয়র ও দলের কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীকে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম প্রার্থী হন। কমিশনের বেঁধে দেয়া নির্দিষ্ট সময়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতীকও পান তিনি। এ ঘটনায় দল তাকে বহিষ্কার করে। তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। নির্বাচনী মাঠে বিএনপির মধ্যকার এই মতবিরোধের সুফল ভোগ করছিলেন আরিফুল হকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বদর উদ্দিন কামরান। এদিকে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণার কয়েকদিন পর থেকেই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সেলিমকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেন। অবশেষে কারাবাসে থাকা চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বার্তা পেয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। গত ১৯শে জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে আরিফুল হক চৌধুরীর কুমারপাড়া এলাকার বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে আরিফের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সরে দাঁড়ান। এ সময় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান। একইসঙ্গে সেলিম বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামারও কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সেলিমের মা ও স্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে সেলিম বলেন, আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বিএনপি নেতা, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও কারাগারে বন্দি থাকা আমার মা খালেদা জিয়ার অনুরোধে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে আমার বন্ধু আরিফকে সমর্থন দিলাম। তিনি বলেন, আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য কারাগারে বন্দি অবস্থায় থেকে চিরকুট লিখে বিভিন্ন মাধ্যমে আমার কাছে পাঠিয়েছেন দেশনেত্রী ও আমার মা খালেদা জিয়া। দলের সবার প্রতি সম্মান রেখেই এবার সরে দাঁড়িয়েছি। বিএনপি একটি বৃহৎ দল, যার কারণে আমাদের মধ্যে একটু মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। কিন্তু দলের ব্যাপারে আমরা সবসময় ঐক্যবদ্ধ।

অনেকেই বলছেন, সেলিমের এই সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ যে সুবিধা পাচ্ছিল তাতে অনেকটা ভাটা পড়েছে। এর প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে। ওই দিন সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে থেকেই পুলিশ আশেপাশে অবস্থান নেয়। সম্মেলন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মেয়র প্রার্থী আরিফসহ সব ক’টি গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। এর আগের রাতে আভাস পেয়ে সেলিমের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বিএনপির অভিযোগ, পুলিশ তাকে তুলে নিতে গিয়েছিল। কিন্তু সেলিমের দৃঢ়তায় ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়। সংবাদ সম্মেলনে সেলিম সে বিষয়টির দিকেও ইঙ্গিত করেন।

নির্বাচন থেকে সেলিমের বসে যাওয়ার পর থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। সিটির বিভিন্ন এলাকায় নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে থাকে। যেসব ঘটনার দায় চাপানো হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর। জ্ঞাত-অজ্ঞাত নেতাকর্মীদের মামলার জালে জড়ানো হয়।

এদিকে, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে সেলিমের দেখা মেলেনি সিলেটে। বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়েও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেলিমের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কেউ অবগত নন। কেউ কেউ বলছেন, তিনি অসুস্থ, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাই মাঠে আসতে পারছেন না। কিন্তু কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছেন, সে ব্যাপারে কারো কাছে কোনো তথ্য নেই। একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, সেলিম বর্তমানে ঢাকাতে আছেন। কিন্তু কোথায় আছেন তা জানাতে পারেনি সূত্রটি। তবে বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি বর্তমানে সিলেট নেই। সিলেটে তার নিরাপত্তাসহ নানা ধরনের হুমকি-ধমকি রয়েছে। আর এ কারণেই তিনি সিলেট ছেড়েছেন।

গতকাল বদরুজ্জামান সেলিমের খোঁজ নিতে, শাহী ঈদগাহ এলাকার মীর হাজিরবাগের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার কোনো স্বজনও ওই বাড়িতে নেই। বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী ফরহাদ জানান, ৫-৬ দিন আগে তারা সপরিবারে চলে গেছেন, আর ফেরেননি। কোথায় গেছেন, জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আর কিছু জানেন না।

সিলেট মহানগর বিএনপির সহসভাপতি সালেহ আহমেদ খসরু বলেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়ায় বদরুজ্জামান সেলিমের ওপর প্রশাসনের চাপ ছিল। তিনি গ্রেপ্তার আতঙ্কে ছিলেন। তাই হয়তো সিলেট ছেড়ে গেছেন। এদিকে অসমর্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের তিনদিন পর বদরুজ্জামান সেলিম বিদেশে পাড়ি জামিয়েছেন।

(Visited ১১ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি