পাকিস্তানে আজ ২৫ জুলাই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশটির চারটি প্রদেশেও নতুন সরকার গঠনের লক্ষ্যে ভোট গ্রহণ চলবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে গতকালই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। কমিশনের প্রধান বিচারপতি সরদার মোহাম্মদ রেজা গতকাল এক ভিডিও বার্তায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার করেন। ওই ভিডিও বার্তায় জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ভোট প্রদানের আহ্বান জানান রেজা। খবর ডনের।আজকের নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটার সংখ্যা ১০৫.৯৫ মিলিয়ন। ৮৫ হাজার ভোট কেন্দ্রে সকাল ৮ থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ভোটাররা কীভাবে ভোট দেবেন তা নিয়ে গত কয়েক দিন থেকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে। এদিকে পাকিস্তানে নির্বাচন নির্বিঘ্ন করাটা বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা যে কোনো স্থানে রয়েছে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা। এ পরিস্থিতিতে ভোটাররা যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারেন সে জন্য প্রায় ৮ লাখ নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। গতকালই নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা অবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। এ ছাড়া কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়েছে।এদিকে চলতি নির্বাচন শুরুর পর থেকেই নানাভাবে বলা হচ্ছে, এবার ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ইনসাফ (পিটিআই) জয়ী হবে। বহু বছরের লালিত স্বপ্ন পূরণ করে ইমরান হতে পারেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দুর্নীতির মামলায় বর্তমানে জেল জীবন অতিবাহিত করছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ইমরানের পথের অন্যতম বাধা। নওয়াজ জেলে থাকলেও তার জনপ্রিয়তা খুব বেশি কমেছে তা বলা যাবে না। এ ছাড়া পাকিস্তান নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ পাঞ্জাব হলো নওয়াজের ঘাঁটি। সেখানে রয়েছে প্রায় অর্ধেকের বেশি আসন। গতকালও তিনি জেল থেকে ভিডিও বার্তায় জনগণের সমর্থন কামনা করেছেন। জেলে বসে এই আর্তির মূল্য জনগণ কেমন দেয় সেটাই দেখার বিষয়। যদিও লন্ডন থেকে পালিয়ে না গিয়ে স্বেচ্ছা কারাবরণ করায় জনগণ তার সাহসের তারিফ করেছে। তাই ইমরানকে জিততে হলে নওয়াজের ঘাঁটি পাঞ্জাবে ফল ভালো করতে হবে। এ ছাড়া সিন্ধু প্রদেশে রয়েছে বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপিপি শক্তিশালী অবস্থানে। কিন্তু প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে পিপিপি নিজের জায়গা করতে পারবে না বলে রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের মত। তবে পিপিপির আসনগুলো সরকার গঠনের সময় জোট বাঁধতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সেই সময় পিপিপি কোন দিকে সমর্থন দেয় সেটা মুখ্য বিষয়। দলটি আপাতত ইমরান খানকে সমর্থন দেবে না বলে নির্বাচনীয় প্রচারে তা বলে দিয়েছে।তবে এবারের নির্বাচনে আরেকটি বিষয় আলোচিত হচ্ছে তা হলো সেনাবাহিনী ইমরান খানকে সমর্থন দিচ্ছে। এ ছাড়া নির্বাচনে সেনা হস্তক্ষেপ নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। বলা হচ্ছে এখন আর সেনাবাহিনী সরাসরি ক্ষমতা দখল করে না কিন্তু তারা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ক্ষমতায় বসাতে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ে। সেই ক্ষেত্রে বলা যায়, ইমরানের পাল্লাই ভারী। সেনা-সংযোগের সমালোচনা ছাড়াও এবার জনমত জরিপও ইমরানের পক্ষেই দেখা গেছে।
তথ্য সূত্র : ডন ও বিবিসি।