খুলনা প্রতিনিধি : ওরা ১১ থেকে এখন ৪০ জন। ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভাড়ায় চালিত ১১ জন মটরসাইকেল ড্রাইভার স্ব-উদ্যোগী হয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ইলেভেন ব্রাদার্স সেবা সংস্থা’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। প্রতিষ্ঠার শুরু হতেই নিজেদের আয় থেকে দৈনিক ২০ থেকে ৫০ টাকা করে সঞ্চয় করতে থাকেন সদস্যরা। সঞ্চিত অর্থ দিয়ে সমাজের উন্নয়ন ও আত্মমানবতার সেবায় কাজ শুরু করে সংগঠনটি। হাটি হাটি পা পা করে দীর্ঘ ৬ বছর পাড়ি দিয়েছে সংগঠনটি। এখন এর সদস্য সংখ্যা ১১ ছাড়িয়ে ৪০ জন।
মংলার মিঠাখালী ইউনিয়নের খাসেরডাঙ্গা মটরসাইকেল স্ট্যান্ড সংলগ্ন নিজস্ব কার্যালয়ে বুধবার (২৫ জানুয়ারি) ৭ম বর্ষপূর্তি জাঁকজমকভাবে পালন করেছে এ সংগঠনটি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদসহ সুশীল সমাজের লোকজন।
এ অনুষ্ঠানে গিয়ে জানা গেল সংগঠনটির বিভিন্ন ধরনের সেবা সম্পর্কে। স্বেচ্ছায় রক্তদান থেকে শুরু করে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো, গরীব শিক্ষার্থীদের মাঝে খাতা-কলম বিতরণ, ধুমপান-মাদককে না বলা, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, নিরাপদ সড়ক, ইভটিজিং প্রতিরোধ, সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়া, গরীব-দুস্থ্যদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ, ফ্রি ডাক্তারি চিকিৎসা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্বর্ধনাসহ সমাজ উন্নয় ও আত্মমানবতায় সেবার নানা কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছে সংগঠনটি।
সংগঠনটির সভাপতি মো: শেখ ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক সুজন কুমার হালদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্যা রবিউল ইসলাম জানালেন, ভাড়ায় মটরসাইকেল চালিয়ে সামান্য যে উপার্জন করি তা দিয়েই যতটুকু সম্ভব আমরা সমাজের উন্নয়ন ও আত্মমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছি। মানুষের জন্য যে কিছু একটা করতে পারছি এটাই বড় তৃপ্তি।
বর্ষপূতি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সাংসদ তালুকদার আব্দুল খালেক উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি মংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, মংলা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ লুৎফর রহমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিদের সবাই সংগঠনটির সার্বিক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রসংশা করেন। এরপর সাংসদ তালুকদার আব্দুল খালেক সংগঠনের পক্ষে ত্রুীড়া সামগ্রী, শীত বস্ত্র, শিক্ষক ও মেধাবী শিক্ষার্থীর সর্ম্বধনা ক্রেস্ট, গরীব শিক্ষার্থীদের স্কুল পোশাক বিতরণ করেন।
এ সংগঠন থেকে উপকৃত হওয়া স্থানীয় বাসিন্দা পরিতোস দাস জানান, টাকার অভাবে যখন মেয়ের বিয়ে দিতে পারছিলাম না ঠিক তখনই পাশে দাড়িয়েছিল এই সংগঠনটি।
মোজাফফার শেখ জানান, স্ত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ওষুধ কেনার টাকা ছিল না। সংগঠনের দারস্থ হলে তারাই সব চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করে।
শ্যামল দাস জানান, অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় গ্রুপের রক্ত মিলছিলনা, সংস্থার সদস্যরা স্বেচ্ছায় রক্তদান করায় এখন আমি সুস্থ্য।