রাখাইনের রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে গঠিত মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রভাবশালী সদস্য কবসাক চুটিকুল পদত্যাগ করেছেন। তিনি উপদেষ্টা পরিষদের সেক্রেটারির দায়িত্বে ছিলেন। এ নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের দুই জন সদস্য পদত্যাগ করলেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই সদস্যের পদত্যাগের কারণে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট ওই পরিষদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
খবরে বলা হয়, সহিংসতা শুরু হওয়ার পর জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান সরজমিন রাখাইন পরিদর্শন করেন।
তিনি সংকট নিরসনের জন্য মিয়ানমারের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশমালা পেশ করেন। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করার জন্য মিয়ানমার ‘কমিটি ফর ইম্পিলিমেন্টেশন অব দ্য রিকমেন্ডেশন অন রাখাইন স্টেট’ নামে একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন। কিন্তু শুরুতেই মার্কিন রাজনীতিবিদ বিল রিচার্ডসন এই পরিষদ থেকে পদত্যাগ করলে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এবার আরেক প্রভাবশালী সদস্য কবসাক চুটিকুল পদত্যাগ করলেন।
কবসাক চুটিকুল আগে থাইল্যান্ডের কূটনীতিক ছিলেন। পদত্যাগের বিষয়ে ব্যাংকক থেকে তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার এক বৈঠকে আমি মৌখিকভাবে পদত্যাগের কথা বলেছি। মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ মনে করে, তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ নিরসনে যথেষ্ট কাজ করেছে। পাশাপাশি মিয়ানমার সব সময় রোহিঙ্গা সংকটকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে আখ্যা দেয়। তারা মনে করে, নির্যাতনের যেসব কথা বলা হচ্ছে এসব তাদের নামে অপপ্রচার। বাস্তবে তারা কোনো ভুল করেনি।
মিয়ানমারে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়ার কথা উল্লেখ করেন কবসাক। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদকে আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহ করতে দেয়া হয়নি। এমনকি মিয়ানমারে কোনো স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণেরও অনুমতি দেয়া হয়নি। পরিষদের সদস্যদের এক জায়গায় জমায়েত হওয়ার ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাদের অনলাইনে বৈঠক করতে পরামর্শ দিয়েছে সরকার। এসব প্রতিকূল পরিবেশের কারণেই মূলত পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তবে, কবসাকের পদত্যাগ নিয়ে মিয়ানমার কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। দেশটির কার্যত নেত্রী অং সান সুচির দপ্তর থেকেও কিছু বলা হয়নি।