সমাবেশ শেষ করে ফেরার পথে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত কয়েকজন আন্দোলনকারী। কোটাব্যবস্থার সংস্কার ও বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও মারধরের বিচারের দাবিতে তাঁরা সমাবেশ শেষ করে ফিরছিলেন।
আজ রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘সর্বস্তরের ছাত্র সমাবেশের’ কর্মসূচি ছিল আন্দোলনকারীদের। সেখান থেকে ফেরার পথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একজন ও এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যাল এলাকায় আরও দুজনকে পেটান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ চলাকালীন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পাশেই অবস্থান করছিলেন।
বেলা তিনটায় এই সমাবেশ শুরু হয়। এতে কোটা আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা রাশেদ খানের মা বক্তব্য দেন। তিনি কান্নাকাটি করে তাঁর ছেলেকে ফেরত চান। পরে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে কয়েকজন সম্প্রতি আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
এ সময় ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে সমাবেশের আশপাশে দেখা গেছে। কেউ কেউ সমাবেশে ঢুকে মুঠোফোনে আন্দোলনকারীদের ছবি তুলে নিচ্ছিলেন।
বিকেল পাঁচটার দিকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে সমাবেশ শেষ করেন যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা। তিনি ২৫ জুলাই সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়ে বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
পরে আন্দোলনকারীরা পাঁচ-ছয়জন করে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে সমাবেশস্থল ত্যাগ করা শুরু করেন। এ সময় একটি দল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকলে সেখানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার মো. নিজামুল ইসলামসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী তাঁদের ধাওয়া দেন। একজনকে আটকে মারধর করা হয়। তখন আন্দোলনকারীরা সবাই একযোগে উদ্যানের ভেতরে ঢুকে গেলে ছাত্রলীগের নেতারা সরে পড়েন। জিয়াউর রহমান হলের এক নেতাকে ধাওয়া করেন আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন ও রাতুল সরকার সিএনজিতে করে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে ধাওয়া দিয়ে বাটা সিগন্যালের সামনে তাঁদের আটক করেন ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। ওই দলে ছিলেন জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আমিনুল ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বরিকুল ইসলাম প্রমুখ।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দিদার মো. নিজামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কিছু হয়নি।’ তাঁর সঙ্গে থাকা এক নেতা আন্দোলনকারী একজনকে মারধর করছেন—এমন ছবি আছে জানালে তিনি বলেন, ‘আমরা দৌড়াদৌড়ি দেখে ওদিকে গিয়েছিলাম। কিন্তু মারধরের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। ’