শামীম আহমেদ বরিশাল॥
দেশের দ্বিতীয় দক্ষিণাঞ্চল নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার হিজলা-গৌরবদী ইউনিয়নের মেঘের চর নামক স্থানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প নির্মানের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেছে বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রালয়ের অতিরিক্ত সচিব,জেলা প্রশাসক সহ একদল সরকারী মুখ্য বৈজ্ঞানিক প্রতিনিধি দল।
সাম্ভাব্য যাচাই শেষে পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে উৎপাদন শুরু করবে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
শনিবার জেলার হিজলা উপজেলার মেঘের চর নামক স্থানটিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান প্রকল্পের সম্ভাব্য স্থান জমি নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন দিক ও জমির নকসা পর্যবেক্ষন পরিদর্শন করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্র নাথ রায় চৌধুরী বলেন, এখানে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মান করার জন্য জমি অধিগ্রহন করার প্রয়োজনীয়তা না থাকার থাকার ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারের বিপুল পরিমান অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে। এছাড়া উক্ত জমিতে জনবসিত না থাকায় কোন পূর্নবাসনের ক্ষেত্রে নেই কোন ঝামেলা। এছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যে জমি গ্রহন করা হয়েছে সেখানের আশেপাশে কোন জনবসতি না থাকার কারনে পরবর্তি সময়ে কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত র্দর্ঘটনা ঘটলেও জানমালের ক্ষয় ক্ষতির সম্ভবনাও কম রয়েছে। অন্যদিকে মেঘনার মূল প্রবাহের পার্শ্বে অবস্থানের কারনে উক্ত জমিতে প্রকল্পের কাজ করার লক্ষে নৌ পথের যোগাযোগের ব্যাপক সুবিদা রয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারের বিপুল পরিমান অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় হবে।
এপ্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২ হাজার একর জমির প্রয়োজন দেখা দিলেও এখানে চাহিদার চেয়ে বেশী জমি রয়েছে ২২৫৫.৯৬ একর । এখানে সবচেয়ে যে সুবিদা রয়েছে তা হলো উক্ত জমি সম্পূর্ণ সরকারী খাস ভূমি থাকার কারনে কোন ঝামেলার মুখামুখি দারস্থ হতে হয়নি। তিনি আরো বলেন তারা এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পরিবেশ প্রকৃতিগত ৬২টি দিক বিবেচনা করে উপযুক্ত হলে তবে চরমেঘা মৌজায় এ প্রকল্প বাস্বায়ন করা হবে। দক্ষিণাঞ্চল বরিশালের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রথম প্রর্যায়ের জরিপ সমিক্ষা করনের কাজে ব্যায় হবে ৮ কোটি ৫০ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান প্রকল্প কাজের জমি দেখার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্র নাথ রায়ের সাথে আরো ছিলেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. এ এফ এম মিজানুর রহমান, মুখ্য প্রকৌশলী ড. আঃ রাজ্জাক, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আখতারুজ্জামান, মুখ্য ভূ তথ্যবিদ ইব্রাহিম খলিল, বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবুল কালাম তালুকদার, হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু জাফর রাসেদ, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপক কুমার রায়, সহকারী কমিশনার মোঃ আহসান মাহমুদ রাসেল,সহকারী কমিশনার মোজাম্মেল হক চৌধুরী ও গবিন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন তালুকদার। অতিরিক্ত সচিব বলেন আরো বলেন এখানকার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দুটি পাওয়ার প্লান্ট ইউনিট থেকে ১২শ’ করে দুটি থেকে পাওয়া যাবে ২৪০০ শ’ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ।
তিনি আরো বলেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ১২হাজার একর জমির উপর নির্মান কাজ শেষ করতে ব্যায় হয়েছে ১লক্ষ ১৮ হাজার কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ৩০ই নভেম্বর রুপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরুর সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান করার ঘোষনা করেন। এখানকার প্রকল্পের কাজ শেষ করতে কি পরিমান অর্থ ব্যায় হবে তা তিনি তাৎখনিকভাবে অর্থের পরিমান বলা সম্ভব নয় বলে জানান।উল্লেখ্য বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান দক্ষিণাঞ্চলের বরিশালের হিজলা-গৌরবদী এলাকায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হলে একদিকে সরকারী অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি জনবসতির কোন ধরনের সমস্যা নেই বলে ৫টি বিষয়ের উপর প্রতিবেদন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন চেয়ারম্যান, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প পরিচালক সহ ৬টি দপ্তরে প্রেরন করার আলোকেই তারা ঢাকা থেকে এসে সারাদিন পরিদর্শন করে পুনরায় প্রতিনিধি দল বিকালে বরিশালে ফিরে আসেন।