উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের ভিত্তিতে টানা এক মাস এক দিন পর ধর্মঘট স্থগিত করে কাজে যোগ দিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। মঙ্গলবার (২০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বরিশাল শহরের সার্কিট হাউজের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সমঝোতা বৈঠকের পরে ধর্মঘট স্থগিত করে তারা কাজে যোগ দেন। এর আগে সকালে বরিশাল বিভাগীয় কমিশানর মো. শহিদুজ্জামান ও জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের মধ্যস্থতায় সিটি করপোরেশনে মেয়র আহসান হাবিব কামাল ও আন্দোলকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এ সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সমঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার স্থায়ী কর্মকতা-কর্মচারীদের ২ মাসের বকেয়া বেতন ও ৩টি প্রভিডেন্ট ফাণ্ডের টাকা এবং দৈনিক মুজরি ভিত্তিক শ্রমিকদের দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে আরো ১ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ২৭ মার্চ আরো একটি সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমে বকেয়া বেতন পরিশোধের স্থায়ী সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়।
বিসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ও আন্দোলকারীদের নেতা দীপক লাল মৃধা জানিয়েছেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে আমরা বরিশাল-১ আসনের সাংসদ আবুল হাসানাত আব্দুলাহর স্মরণাপন্ন হই। পরে তার হস্তক্ষেপে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের মধ্যস্ততায় সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়র দাবি মেনে নেওয়ায় বেলা ১ টা থেকে আন্দোলনরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছেন। নগরজুড়ে গত ৩ দিনে যে বর্জ্য জমা পড়েছে তা পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের বর্জ্য অপসারণ কাজ সম্পন্ন করা হবে বলেও জানান দীপক লাল মৃধা।
বিসিসি মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন- সকলের সহযোগীতায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনের পথ থেকে সরে কাজে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এটা ভালো, তবে বিগত ১ মাসের অধিক সময় ধরে আন্দোলনের ফলে করপোরেশন ও নগরবাসীর যে ক্ষতি হয়েছে তা বাড়তি কাজের মাধ্যমে পুশিয়ে দেওয়া হবে বলে আমাকে জানিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের আয়ের খাতে ২৩ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে, তা আদায়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন তারা।
তিনি বলেন- হিসাব শাখায় মাত্র এক কোটি টাকা রয়েছে। কিন্তু বেতন দেওয়ার জন্য এখন যে টাকা প্রয়োজন তা বিকল্প খাত থেকে ধার নেওয়া হবে। আবার করপোরেশনের বকেয়া টাকা আদায় হলে এ ফাণ্ডে ফেরত দেওয়া হবে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সুন্দর একটি বৈঠকে আলোচনার মধ্য দিয়ে দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন থেকে সরে এসেছে। তারা কাজে যোগদান করে সব ক্ষতি পুশিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বকেয়া বেতন ও প্রভিডেন্ট ফাণ্ডের টাকার জন্য কর্মবিরত, অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছে বিসিসির স্থায়ী ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিক ২ হাজারের ওপর কর্মকর্তা-কর্মচারী।”