পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো হিন্দু নারী সিনেট সদস্য নির্বাচিত হলেন। গতকাল শনিবার পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী হিসেবে তিনি সিন্ধু প্রদেশে সিনেটের সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত হন।
পাকিস্তানী গণমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, কৃষ্ণা কুমারী নামের এই হিন্দু নারী সিন্ধু প্রদেশের থর জেলার নগরপারকার শহরের প্রত্যন্ত এলাকা ধানা গ্রামের কোহলি সম্প্রদায়ের। তিনি পাকিস্তানের সিনেটে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত হয়েছেন।
বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) কুমারী বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি কল্পনাও করিনি আমি সিনেটের সদস্য হতে পারবো।’
নবনির্বাচিত এই সিনেট সদস্য বলেন, ‘আমি নিপীড়িত মানুষদের জন্য কাজ করে যাবো। বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার জন্য কাজ করবো।’
কৃষ্ণা কুমারী ১৯৭৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার তিনবছর উমেরকোট জেলার ভূস্বামী কুনরির ব্যক্তিগত জেলখানায় বন্দিজীবন কাটান। পরে পুলিশের এক অভিযানে তাদের মুক্ত করা হয়।
এরপর উমেরকট জেলার তালহি গ্রামে তিনি প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হন। পরে তিনি মিরপুরখাস জেলার তানদো কলাচি এলাকায় পড়াশোনা করেন। অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে বাবা-মা কৃষ্ণা ও তার ভাইয়ের লেখাপড়া করান। মা-বাবার অনুপ্রেরণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হন কৃষ্ণা।
১৯৯৪ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ১৬ বছর বয়সে তিনি সিন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাল চাঁদ নামে এক ছাত্রকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরেও লেখাপড়া চালিয়ে যান কৃষ্ণা।
২০০৫ সালে তিনি সিন্ধু প্রদেশের থারপেরকার জেলায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সেমিনার ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিতে শুরু করেন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীর যোদ্ধা রুপলো কোহলির পরিবারের সদস্য কৃষ্ণার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির থার অঞ্চলের এমপি মহেশ কুমার মালানি। নির্বাচনের আগে ডনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মহেশ এই আশাবাদের কথা জানিয়েছিলেন। রুপলো কোহলি ১৮৫৭ সালে ব্রিটিশ বাহিনীর ওপর আক্রমণের কারণে নগরপার্কারে গ্রেপ্তার হন এবং ১৮৫৮ সালের ২২ আগস্ট তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।