মঙ্গলবার , ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

পুলিশ সেবাকে আরও জনবান্ধব করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর।।

প্রতিবেদক
alltimeBDnews24
জানুয়ারি ২৪, ২০১৭ ৪:০২ পূর্বাহ্ণ

রির্পোটঃ ডেস্ক নিউজ.

শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে কমিউনিটি পুলিশিংকে আরও জোরদার করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক মুল্যবোধে একাত্ম হয়ে পুলিশ সেবাকে আরও জনবান্ধব করার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঔপনিবেশিক আমলের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সাথে একাত্ম হয়ে পুলিশের সেবাকে আরও জনবান্ধব করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে অসহায় ও বিপন্ন মানুষের প্রতি অকুণ্ঠচিত্তে সেবার হাত প্রসারিত করতে হবে।’

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সব কথা বলেন। খবর বাসস।

শান্তিময় ও নিরাপদ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে সরকার আরও জোরদার করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি আত্মমর্যাদাশীল এবং আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু দেশী-বিদেশী একটি চক্র বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রাকে বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। গণতান্ত্রিক পথে মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়ে এরা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুর ভাষণের উদ্বৃতি তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ভাষণে যে কথা বলেছিলেন-আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমাদের পুলিশ বাহিনী স্বাধীন দেশের পুলিশ বাহিনী। আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে দায়িত্ববোধ থাকতে হবে জনসেবা করার মানসিকতা নিয়ে।’

তিনি বলেন, ‘কোমলমতি যুবক-কিশোরদের ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করে জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ধর্মের অপব্যাখ্যা করে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে সহিংস আক্রমণের মাধ্যমে মানুষ হত্যার মত বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডে প্ররোচিত করছে।’

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং আমাদের উন্নয়নের প্রধান বাধা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি হলি আর্টিজান এবং শোলাকিয়া জঙ্গি হামলা মোকাবেলায় ৪ জন পুলিশ সদস্য আত্মোৎসর্গ করেছেন। নির্ভীক এই ৪ পুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অসংখ্য প্রাণ রক্ষা পেয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় পুলিশের সাফল্য প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘সম্প্রতি আশুলিয়ার আশকোনা এবং মিরপুরের কল্যাণপুর পুলিশ জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করেছে। পুলিশ জঙ্গি হামলার মাস্টারমাইন্ড, অস্ত্রদাতা, প্রশিক্ষক এবং আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।’

শেখ হাসিনা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা করে বলেন, ‘শুধু দেশেই নয়, গত দুই যুগের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে নিজেদের কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় প্রদান করে বহির্বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি একেএম শহীদুল হক এবং প্যারেড কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোখলেসুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’ উপলক্ষে পুলিশ সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন প্রধানমমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্যারেড কমান্ডার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারকে সঙ্গে করে একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের মাঝে ৪টি ক্যাটাগরিতে ১৩২ জন পুলিশ সদস্যের মাঝে বাংলাদেশ পুলিশ পদক ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক বিতরণ করেন।

২০১৬ সালের মরণোত্তর পুলিশ পদক বিপিএম পান গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ সদস্য রবিউল ইসলাম ও মো. সালাউদ্দিন খান। উভয়ের স্ত্রী এই মরণোত্তর পদক গ্রহণ করেন।

একই সঙ্গে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে নিহত পুলিশ কনস্টেবল শহীদ জহীরুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ’র পক্ষে তাঁর স্ত্রী এবং পুলিশ কনস্টেবল শহীদ আনসারুল হক কিশোরগঞ্জ’র পক্ষে তাঁর মা মরণোত্তর পুলিশ পদক গ্রহণ করেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সিআইডি’র ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও একাত্তরের বীর শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘রাজারবাগ-৭১’ নামের আবক্ষ মূর্তির নামফলক উন্মোচন করেন।

প্রধানমন্ত্রী ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৭ উদযাপন উপলক্ষে কেক কাটেন।

মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়রসহ সামরিক ও বেসামরিক পর্যায়ের ঊধর্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থকে আমরা ব্যয় নয়, বিনিয়োগ মনে করি। আমাদের সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কার্যক্রমের বিস্তৃতি দেশের প্রধান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশেও সমভাবে বিস্তৃত হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বায়নের প্রেক্ষিতে পুলিশের কর্মক্ষেত্র ও কর্মব্যাপ্তি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেবল চুরি-ডাকাতি, হত্যা-রাহাজানি বন্ধ নয়, পুলিশের কাজের ক্ষেত্র আজ বিস্তৃত হয়েছে-সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মাদক পাচার এবং পণ্য চোরাচালান ও নারী-শিশু পাচার প্রতিরোধে, এমনকি জলজ ও বনজ সম্পদ এবং পরিবেশ সংরক্ষণেও।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নারী সদস্যগণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে আমাদের পুলিশ সদস্যদের অর্জিত অভিজ্ঞতা দেশের আইন-শৃঙ্খলাসহ গণতন্ত্রের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

পুলিশ বাহিনীর আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে সাথে নিরাপত্তা ও অপরাধের নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশের আধুনিকায়নের বিকল্প নেই। বাংলাদেশ পুলিশের কৌশলগত পরিকল্পনা, অবকাঠামো এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করে কর্মক্ষেত্রে পুলিশের সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে ।

পুলিশের উন্নয়নে গৃহীত সরকারে বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারই ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৭৩৯টি ক্যাডারপদসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃজন করে।

দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশ পুলিশে আরও ৫০ হাজার জনবল নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৪১ হাজার পদ সৃজন করা হয়েছে।

বর্ধিত জনবলের সাথে প্রয়োজনীয় যানবাহন ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সরবরাহের বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় রয়েছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট গঠন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠন করা হয়েছে।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠনের ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে- বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া আরও বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট যেমন-পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ এবং ২টি স্পেশাল সিকিউরিটি এন্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তির নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত ও জোরদারের করতে তাঁর সরকার বিশেষায়িত ব্যাটালিয়ন গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ।

পুলিশ বাহিনীর এসআই/সার্জেন্ট পদকে ৩য় থেকে ২য় শ্রেণিতে এবং ইন্সপেক্টর পদকে ২য় থেকে ১ম শ্রেণিতে উন্নীত করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক প্রদত্ত আইজিপি’র র‌্যাংক ব্যাজ পুনঃপ্রবর্তনপূর্বক আইজিপি’র পদকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় উন্নীতকরণ এবং পুলিশ বিভাগের ২টি গ্রেড-২ পদকে গ্রেড-১ পদে উন্নীত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এপিবিএন বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টারসহ সারাদেশে ৩০টি ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেই সাথে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে সিআইডিতে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার এবং সাইবার ক্রাইম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।

পুলিশ সদস্যদের জন্য ঝুঁকি ভাতা প্রবর্তন, পুলিশের আবাসন, চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধিসহ পুলিশের জনসেবা বুদ্ধির জন্য সরকারের চালু করা ‘বিডি পুলিশ হেল্প লাইন’ নামক অ্যাপ চালুর প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার পথ অনুসরণ করে আমরা বাংলাদেশ পুলিশে নারীদের নিয়োগ দিচ্ছি। প্রথমবারের মত ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশে ট্রাফিক সার্জেন্ট হিসেবে নারীদের নিয়োগ প্রদান করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশে সর্বপ্রথম ১৯৭৪ সালে নারীদের নিয়োগ প্রদান করেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশ পদক ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এত বিপুল সংখ্যক পদক আর কখনো প্রদান করা হয়নি। এ পদক আপনাদের কাজের স্বীকৃতির পাশাপাশি আপনাদের ভবিষ্যতেও আরও পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে। পাশাপাশি আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ব্রতী হবেন।’

 

(Visited ১০ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি