এমনেতেই আমাদের তেমন টেস্ট খেলা হয় না। তারপর উইকেট যদি হয় অপরিচিত তাহলে ভালোরেজাল্ট আশা করা অর্থহীন। এমনটিই বলছেন, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল।
ঢাকা টেস্টে শ্রীলংকার করা ২২২ ও ২২৬ রানের জবাবে ১১০ ও ১২৩ রানে অলআউট বাংলাদেশ দল। দুই ইনিংসে বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে ২১৫ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যায় টাইগাররা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের এমন বাজেভাবে পরাজয় নিয়ে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপে আশরাফুল বলেন, এই ধরনের উইকেটে আমরা যদি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে অভ্যস্ত হতাম তাহলে আন্তর্জাতিকে খেলতে তেমন সমস্যা হত না। যদিও আমারা হোম কন্ডিশনে খেলেছি, কিন্তু আমরা তো এই ধরনের উইকেটে খেলে অভ্যস্ত না।
প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা স্পিনে এতটা শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও, ঢাকা টেস্টে স্পিন উইকেটে খেলাটা যুক্তি সংগত ছিল কী? এমন প্রশ্নের জবাবে টেস্টের এই সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান বলেন, পরাজয়ের পরে এমনটি আমরা বলতেই পারি। কিন্তু এই মাঠেই তো আমরা ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে টেস্ট জিতেছি। সেই চিন্তা থেকেই এই উইকেট করা হয়েছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের স্পিনারের চেয়ে শ্রীলংকার স্পিনাররা আরও অনেক কোয়ালিটিফুল। এটা কিন্তু আমাদের মানতে হবে।
ঢাকা টেস্টের উইকেট স্পিনবান্ধব করার আগে টিম ম্যানেজমেন্টের একটু চিন্তা করার দরকার ছিল। এমনটিই বলছেন দেশের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার, এমন উইকেটে খেলার আগে আমাদের ম্যানেজমেন্টের একটু চিন্তা করা উচিত ছিল। তার কারণ অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডে একজন লায়ন আর মঈন আলী ছিল। কিন্তু শ্রীলংকা দলে তিনজন স্পিনার ছিল। আপনি একজনকে সার্ভাইভ করবেন, আরেকজন এসে উইকেট নিয়ে নেবে। যেমন প্রথম ইনিংসে হেরাথ এক উইকেটও পায়নি। অথচ দ্বিতীয় ইনিংসে এসে নিল ৪ উইকেট।
চট্টগ্রামে অসাধারণ খেলায় ঢাকা টেস্টে জয়ের স্বপ্নে খেলতে নামে টাইগাররা। তাদের এই স্বপ্ন দেখার আগে প্রতিপক্ষ ভেবে উইকেট তৈরি করা উচিত ছিল বলছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অলরাউন্ডার, জয়ের চিন্তাটা সাহসী ছিল। তবে এই চিন্তা করার আগে আমাদের সামর্থ নিয়েও ভাবা দরকার ছিল। এমন কোয়ালিটিফুল বোলিংয়ের সামনে আমাদের জয়ের সামর্থ আছে কিনা সেটা নিয়েও ভাবা দরকার ছিল। আর এটা চিন্তা করে উইকেট তৈরি করা দরকার ছিল।
অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের পর এমন বাজেভাবে পরাজয় নিয়ে আশরাফুল বলেন, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড সত্যিই অনেক শক্তিশালী দল, তবে তাদের তুলনায় কোনো অংশে কম নয় শ্রীলংকা। লংকান দলে অনেকগুলো তরুণ মুখ আছে। এই উইকেটের জন্য তাদের বোলিং অ্যাটাক অসাধারণ। তাছাড়া ওরা সম্প্রতি ভারত, পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে অসাধারণ খেলেছে। সাঙ্গাকারা-মাহেলা জয়াবর্ধনে চলে যাওয়ার পরও তারা কিন্তু টেস্টে অসাধারণ খেলে যাচ্ছে।
ত্রিদেশীয় সিরিজের পর টেস্ট সিরিজে হেরে যাওয়াকে আনলাকি বলছেন সাবেক এঅধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আনলাকি যে আমরা ত্রিদেশীয় সিরিজের পর টেস্ট সিরিজটাও হেরে গেলাম। এটার জন্য কোচের একটা বড় অবদান তো আমি দেবই। আমাদের ব্যাড লাক, যে অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও আমরা পারিনি।’
হাথুরুসিংহে চলে যাওয়ার পর ‘টেকনিক্যাল ডিরেক্টর’ হিসেবে টাইগারদের আপদকালীন কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন।
জাতীয় দলে হাইপ্রোফাইল কোচ না থাকায় রেজাল্ট এমন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আশরাফুল বলেন, অনেক দিন হল সুজন ভাই এই দলটার সঙ্গে আছেন। রেজাল্ট না হলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তবে হ্যাঁ, ভালোমানের একজন কোচ থাকা দরকার। কারণ আমরা দেশি মানুষের কথা একরকম ভাবে শুনি, আর বিদেশি মানুষের কথা আরেক রকমভাবে শুনি। এটা আমাদের কালচারের মধ্যে চলে এসেছে।