মালদ্বীপের পার্লামেন্ট দখল করে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ ছাড়া দেশটির বিরোধী দলের দুই পার্লামেন্ট সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার দেশটির রাজধানী মেল শহরে এ ঘটনা ঘটে।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার খবরে বলা হয়, রোববার মালদ্বীপের পার্লামেন্টে অধিবেশ চলছিল। সেখানে বিরোধী দলের সদস্যরা দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ অনিলকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব তোলেন। এর পরই সেনা সদস্যরা পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে ফেলে ও দখল করে।
দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ বেশ কজন বিরোধীদলীয় নেতাকে মুক্তি দিতে সুপ্রিম কোর্ট গত বৃহস্পতিবার আদেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ না মেনে বিরোধী দল বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে অপসারণের চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে রোববার মালদ্বীপের অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ অনিল অভিযোগ করেন। এর পরই তার অব্যাহতির দাবি করেন বিরোধী দলের নেতারা।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এক নির্দেশে মালদ্বীপের পার্লামেন্টে বিরোধী দলের ১২ সদস্যকে তাদের বহিষ্কার করা আসনে ফিরিয়ে আনা হয়। এতে দলটি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু ক্ষমতায় থেকে যায় দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের হাতেই। পার্লামেন্টে ফিরে আসা ওই ১২ সদস্যের দুজনকেই রোববার দেশটির বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মালদ্বীপের সর্বোচ্চ আদালতের ওই নির্দেশ দেশটির রাজনীতিকে অশান্ত করে তোলে। এতে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন বেশ সমস্যয় পড়েন। কারণ পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর ক্ষমতার অনেকাংশই চলে যায় বিরোধী দলের হাতে। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের বিরুদ্ধেও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তবে তা তিনি বরাবরই অস্বীকার করেছেন।
মালদ্বীপের পুলিশের এক মুখপাত্র আলজাজিরাকে জানান, গ্রেপ্তার হওয়া দুই পার্লামেন্ট সদস্যের নাম আবদুল্লাহ সিনান ও ইলহাম আহমেদ। তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া দুই পার্লামেন্ট সদস্য দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
মালদ্বীপের পার্লামেন্টে বিরোধী দলের প্রধান ইব্রাহিম মুহাম্মদ সলিহ এ বিষয়ে বলেন, তারা ওই দুই পার্লামেন্ট সদস্যকে শিগগিরই মুক্তি দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন অবৈধভাবে দেশ চালাচ্ছে অভিযোগ করে মুহাম্মদ সলিহ বলেন, ইয়ামিন তার অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাকে অধিকৃত করেছেন। অপর দিকে প্রেসিডেন্টের সেনাবাহিনী পার্লামেন্টকে পদদলিত করেছে।
এদিকে এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মুহাম্মদ অনিলকেই সমর্থন জানাবে তারা।