বরিশালের উজিরপুরের শিকারপুরে সরকারিকরণ ঘোষণাকৃত শেরেবাংলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. তৌহিদুল ইসলাম ইরান ও তার সহধর্মীনি আটিপাড়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক শাহানারা মনিকে বেদম মারধর করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পৌর শহরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় অধ্যক্ষ তৌহিদের বাসায় ঢুকে তাকে ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেমায়েত সরদার এবং তার দুই ভাই আনিচ সরদার ও মনির সরদার বেদম মারধর করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
আজ সকালে রেজিস্ট্রেশন নম্বর বিহীন একটি মোটরসাইকেলের ধাক্কায় অধ্যক্ষের শিশু ছেলে আহত হওয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার কথিত অপরাধে তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ তৌহিদুল ইসলাম। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। কাউন্সিলর হেমায়েত সরদার উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উজিরপুর পৌরসভার ১ নম্বর প্যানেল মেয়র।
তৌহিদুল ইসলাম জানান, সকালে তার ছেলে নাফিজ আবদুল্লাহ (৭) ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার জন্য স্থানীয় ইচলাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়। বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে দাড়িয়ে অনুষ্ঠান দেখার সময় রেজিস্ট্রেশনবিহীন একটি মোটরসাইকেল নাফিজকে ধাক্কা দিলে সে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিশু ছেলে দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার খবর পেয়ে তিনি দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং থানা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মোটরসাইকেলটি জব্দ করে। এর কিছুক্ষণ পর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেমায়েত সরদার তার অপর দুই ভাই আনিস সরদার ও মনির সরদার সহযোগীদের নিয়ে অধ্যক্ষের ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা অধ্যক্ষ তৌহিদুলকে এলোপাথারী চর থাপ্পর কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকে। তাকে রক্ষা করতে গেলে তার সহধর্মীনি আটিপাড়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক শাহানারা মনিকেও লাঞ্চিত করে হামলাকারীরা। হামলাকারীরা পুলিশে অভিযোগ দেওয়ার কথিত অপরাধে তার বাসার দরজায়ও লাথি দেয় বলে অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ তৌহিদ।
বিষয়টি ইউএনও মাছুমা আক্তারকে অবহিত করা হলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
অধ্যক্ষের উপর হামলার বিষয়ে জানতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেমায়েত সরদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উজিরপুর থানার ওসি গোলাম সরোয়ার জানান, অধ্যক্ষ তৌহিদুর রহমানের মোবাইল পেয়ে একজন এসআই’র নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তারা সেখানে গিয়ে তাৎক্ষনিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।