প্রায় ৭৬ বছর আগে এক অদ্ভুত অনুষ্ঠানে নিজেদের রক্ত পান করেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনায় প্রমাণ হয় তারা এখনো সেই ঐতিহ্য থেকে বের হতে পারেনি।
১৯৪১ সালে ঘটে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সূত্রপাত। ৩০ জন সদস্য নিয়ে সেনাবাহিনীর আদলে থার্টি কমরেডস গঠিত হয়। ওই বছরই থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ভয়ানক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তারা। অনুষ্ঠানে বাহিনীর সব সদস্যের শরীর থেকে একটিমাত্র সিরিঞ্জ দিয়ে অল্প অল্প করে রক্ত বের করে একটি রুপার পাত্রে রাখা হয়। পরে তা একত্রে মিশ্রিত করে সবাই ওই রক্ত পান করে। পরস্পরের প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে এটি করা হয়।
সে বাহিনীর নেতা হিসেবে অং সানকে নির্বাচিত করা হয়। তিনি বর্তমান স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির বাবা। মিয়ানমারের এ বাহিনী ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল। ১৯৪৭ সালে অবশ্য অং সান হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। সে সময় তার কন্যা অং সান সু চির বয়স ছিল দুই বছর। এরপর মিয়ানমার স্বাধীন হলে বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইনের নেতৃত্বে বেসামরিক সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয় সেনাবাহিনী।
এরপরের কাহিনী মোটেই মানবিক নয়। মিয়ানমারের লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছে, বর্বরতম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তবে এটাই শুধু নির্যাতনের কাহিনীর পুরোটা নয়। প্রায়ই মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরো বহু জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায় তাদের।