বয়সের বাধা পেরিয়ে একের পর এক শিরোপা নিজের করে নিয়ে এখন কিংবদন্তীদের খাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন সুইস সুপারস্টার রজার ফেদেরার। মেলবোর্ন পার্কে গতকাল বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পরে ফেদেরার নিজেই বলেছেন কতদিন পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যাবেন তা নিয়ে কোনো চিন্তাই তার মধ্যে নেই।
৩৬ বছর বয়সী ফেদেরার ক্যারিয়ারে ৩০তম স্ল্যাম ফাইনালে খেলে ২০তম শিরোপার পাশাপাশি ষষ্ঠবারের মতো অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা জিতেছেন। ফাইনালে তিনি ক্রোয়েশিয়ান মারিন সিলিচকে পাঁচ সেটের উত্তেজনাকর লড়াইয়ে ৬-২, ৬-৭ (৫/৭), ৬-৩, ৩-৬, ৬-১ গেমে পরাজিত করে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা অক্ষুন্ন রেখেছেন। গত বছর চির প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের বিপক্ষেও নাটকীয় পাঁচ সেটের লড়াইয়ের পরে শিরোপা জিতেছিলেন ফেদেরার। যদিও এবারের ফাইনালের পথটা বেশ কিছুটা সহজ ছিল। ফাইনালসহ সাতটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতেই দুই ঘন্টারও কম সময় নিয়ে জিতেছেন। সব মিলিয়ে কোর্টে ছিলেন মাত্র ১৩ ঘন্টা ৫৩ মিনিট।
পুরুষদের বিভাগে নিজেকে আরো কতদিন এভাবে দাপটের সাথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে সদা হাস্যজ্জ্বল ফেদেরার বলেছেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, এ ব্যপারে কোন পরিকল্পনা নেই। গত ১২ মাসে আমি তিনটি স্ল্যাম জিতেছি। আমি নিজেও এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। এখন প্রয়োজন নিজেকে ফিট রেখে এগিয়ে যাওয়া, নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকা, তাহলে ভালো কিছু সম্ভব।’
এক্ষেত্রে বয়স কোন বিষয়ই না এমনটা সবসময়ই দাবী করেন ফেদেরার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করিনা বয়স কোন ব্যাপার, এটা শুধুই একটি সংখ্যা। কিন্তু আমার পরিকল্পনার ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেছে নিতে হবে লক্ষ্যগুলো। আমি মনে করি এভাবে সাফল্য সম্ভব।’
রোববার মেলবোর্ন পার্কে জয়ের মাধ্যমে নোভাক জকোভিচ ও অস্ট্রেলিয়ান রয় এমারসনের সাথে সবচেয়ে বেশি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শিরোপার মালিক এখন ফেদেরার। নতুন মৌসুমে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী নাদাল, জকোভিচ ও ওয়ারিঙ্কা ইনজুরির কারণে নতি স্বীকার করলে ফেদেরারের জন্য ফাইনালের পথ অনেকটা সহজ হয়ে যায়। তারপরও শক্তিশালী সিলিচের বিপক্ষে ফেদেরারের লড়াইটা অনুমেয় ছিল।
১৯৭২ সালে কেন রোসওয়াল (৩৭) ও মাল এন্ডারসনের (৩৬) পরে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ফেদেরার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে খেলেছেন। এই জয়ের পরেও অবশ্য নাদালকে পিছনে ফেলে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠতে পারেননি সুইস তারকা। তবে ছয় ধাপ উপরে উঠে ক্যারিয়ার সেরা তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছেন সিলিচ।