প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের দেশে একটা শ্রেণীর মানুষ আছে, যখন দেশে গণতান্ত্রিক ধরা চলে, তাদের ভালো লাগেনা। তাদের মাথায় একটা চিন্তা থাকে দেশে যদি একটা অস্বাভাবিক সরকার, অসাংবিধানিক সরকার, মার্শাল ল’ যদি হয়-সে আশায় তারা থাকে। তারা বাঁকা পথে ক্ষমতায় যাওয়ার অলিগলি খুঁজতে থাকে। যদি আসে তারা মনে করে তাদের একটু গুরুত্ব বাড়ে। ডাক দিলেই তারা ছুটে যায়। কারণ তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার ইচ্ছা আছে। পতাকা পাওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু তাদের সে ইচ্ছা পূরণ হয়না। দেশের জন্য, মানুষের জন্য গণতন্ত্রের জন্য তারা হুমকি। নির্বাচন এলেই তারা সক্রিয় হয়ে ওঠে। সমস্যাটা তাদের নিয়ে। এই শ্রেণিটাই সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক। মানুষের অকল্যাণ করার জন্যই তারা সবচেয়ে ব্যস্ত। এজন্য তারা গবেষণানায় ব্যস্ত থাকে। তাদের গবেষণায় বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই চোখে পড়ে না। ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করে দিয়ে বাঁকা পথে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারা মাঠে নেমেছিল।’
জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমামের (ময়মনসিংহ-৮) সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল ইমাম প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, সেন্টার ফর লিডারশিপ, ২০১৭-এর জরিপে বিশ্বমানবতার চ্যাম্পিয়ান হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানে দ্বিতীয় হয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস আর তৃতীয় হয়েছেন ধনকুবের বিল গেটস । বৃটিশ মিডিয়া উপাধি দিয়েছেন, মাদার অব হিউম্যানিটি। বিভিন্ন দেশ থেকে পাওয়া এমন আরো অনেক উপাধির তালিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, মানব সেবার জন্য শুধু টাকা নয়, প্রয়োজন সাহস ও মমত্ববোধ। যা শেখ হাসিনার মধ্যে রয়েছে। এতগুলো সম্মানসূচক কথা বলার পরে আমার তো মাথা ঠিক থাকতো না। তিনি কিভাবে ঠিক রাখেন? এরপরই তিনি জানতে চান তাহলে কি আর রামপাল বিদ্যুতের প্রয়োজন আছে?
এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উনি উনার কথা দিয়ে এত আলো জ্বালাবার পর হঠাৎ সুইচটা অফ করে দিলেন কেন? (এসময় হাস্য কলবর আর টেবিল চাপড়িয়ে সংসদের ফ্লোর মাতিয়ে তুলেন এমপিরা) ।
শেখ হাসিনা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রয়োজন তো বিদ্যুতের জন্য। দেশের জন্য। উন্নয়নের জন্য। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য। তাদের জিজ্ঞাসা করে দেখেন বিদ্যুতের প্রয়োজন আছে কী না? আমি এটুকুই বলতে চাই কি পাইনি তার হিসাব মিলাতে মন মোর নাহি রাজি। কি পেলাম, পেলাম না সেই হিসাব করি না। আমি কাজ করি দেশের মানুষের জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য । আমার দায়বদ্ধতা হচ্ছে ক্ষুধার্ত দারিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে নিয়ে বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন হাজার বিশেষণ দিলেও আমার মাথা কখনও খারাপ হবে না। আমি বেতালা হব না, এটা আমি বলে দিতে পারি। ওগুলো আমার ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। আমার চিন্তুা একটাই দেশের মানুষ।