- আট বছর পর ঢাকায় বসছে ত্রিদেশীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। আর প্রথম ম্যাচেই আজ স্বাগতিক বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। টুর্নামেন্টের অপর দল শ্রীলংকা। দুই সপ্তাহের এ টুর্নামেন্টে তিন দলের প্রত্যেকেই একে অপরের বিপক্ষে দুইবার করে মুখোমুখি হবে। ২৭ জানুয়ারি ফাইনাল দিয়ে শেষ হবে সিরিজ। স্বাগতিক বাংলাদেশ এই সিরিজে ফেবারিট। তবে তিন দলের সামনেই রয়েছে নিজেদরকে প্রমাণ করার সুযোগ। এই টুর্নামেন্টে তিনটি দলই নিজেদের ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী হলেও স্বাগতিক বাংলাদেশ আজ প্রথম ম্যাচেই জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করতে চায়। মিরপুর স্টেডিয়ামে দুপুর বারটায় শুরু হবে ম্যাচটি।
ত্রিদেশীয় সিরিজে ভালো করা ছাড়া বিকল্প নেই টাইগারদের। কারণ গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পরাজিত হওয়ার পর প্রথম হোম সিরিজ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। তাই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের হতাশাজনক পারফরমেন্স ভুলে গিয়ে নতুনভাবে নিজেদেরকে মেলে ধরতে চায় টাইগাররা। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে খুবই ভালো করছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলা। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বড় পরাজয়ের পর এখন আবার জয়ের ধারায় ফিরতে হবে মাশরাফিদের। কিভাবে আরো ভালো করা যায় সে পথ খুঁজে বের করতে হবে। তবে হঠাৎ করেই কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহের পদত্যাগের পর টাইগারদের জন্য কাজটা আরো কঠিন হয়ে গেছে। তবে সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনকে সাময়িকভাবে টিম ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তার অধিনেই নিজ মাটিতে ভালো করতে চায় বাংলাদেশ। ওয়ানডে র্যাংকিং-এ বাংলাদেশ রয়েছে সাত নম্বরে। আর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের অবস্থান দশম। তাই র্যাংকিং, শক্তির বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ পিছিয়ে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু প্রতিপক্ষকে হাল্কাভাবে নিতে নারাজ টাইগার অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘প্রতিপক্ষ যেই হোক তা সহজ নয়। বিশেষ করে যদি জিম্বাবুয়ের দিকে তাকান তাহলে তারাও ভালো দল। সম্প্রতি তারা শ্রীলংকাকে তাদের মাটিতেই হারিয়েছে। শ্রীলংকাও ভালো দল। ভারতের মাটিতে তারা একটা ভালো ম্যাচ জিতেছে। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে আমাদের ধারাবাহিকভাবে এগোতে হবে। এই ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট সত্যিকারার্থেই আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর সকলেই আপসেট। এ সিরিজটি জিততে পারলে সব কিছুই পরিবর্তন আসবে।’ আজ সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েও নিজেদের মেলে ধরতে চায়। কারণ জিম্বাবুয়ে আগামী মার্চে বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব আয়োজনের আগে নিজেদরকে নতুনভাবে প্রমাণ করতে চায়। গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে চার দিনের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টে মাত্র দুই দিনের মধ্যেই ইনিংস ও ১২০ রানে পরাজিত হয় জিম্বাবুয়ে। মাত্র ৯০৭ বল স্থায়ী হয়েছিল ম্যাচটি। তবে ২০১৩ ও ২০১৫ সালের পর আন্তর্জাতিক এক দিনের ক্রিকেট ম্যাচ না খেলা ব্রেন্ডন টেইলর ও কাইল জার্ভিস দলে ফেরায় আত্মবিশ্বাসী থাকবে জিম্বাবুয়ে। লংগার ভার্সনে খেলার সুযোগ কম থাকায় জিম্বাবুয়ে সিমিত ওভারের ক্রিকেটেই বেশি মনোযোগী হবে বলে আভাস দিয়েছেন দেশটির কোচ হিথ স্ট্রিক। তিনি জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে একমাত্র টেস্টে পরাজিত হওয়া জিম্বাবুয়ে এ সিরিজ দিয়েই আগামী মার্চে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের জন্য প্রস্তুত হতে চায়। ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ৬৭ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। এরমধ্যে ৩৯টি জিতেছে টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের জয় ২৮টি ম্যাচে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে তিন ম্যাচের সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। ঐ সিরিজটি ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিলো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল: মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, ইমরুল কায়েস, এনামুল হক বিজয়, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মোহাম্মদ মিথুন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, আবুল হাসান রাজু, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, সানজামুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ে দল : গ্রায়েম ক্রেমার (অধিনায়ক), হ্যামিলটন মাসাকাদজা, সলোমন মির, ক্রেইগ আরভিন, ব্রেন্ডন টেইলর, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, ম্যালকম ওয়ালার, রায়ান মারে, টেন্ডাই চিসোরো, ব্রেন্ডন মাভুতা, ব্লেসিং মুজারাবানি, ক্রিস্টোফার মোফু, টেন্ডাই চাতারা, কাইল জার্ভিস।
(Visited ১৫ times, ১ visits today)