২০১৭ সালে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ বাহিনীর ১৮২ জন সদস্যকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক- বিপিএম, বিপিএম-সেবা, রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক- পিপিএম ও পিপিএম-সেবা প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাকে মেডেল পরিয়ে দেন।
ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম ১৯৬৫ সালের ৫ জানুয়ারি পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান এবং সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৯১ সালে সহকারি পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন মো. শফিকুল ইসলাম।
পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের পর এই কর্মবীর সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ইতিহাস তৈরি করেছেন। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে তিনি পুলিশ সুপার, ২০১২ সালের জুন মাসে অতিরিক্ত ডিআইজি এবং ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ডিআইজি পদে পদোন্নতি পান।
২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি) হিসেবে যোগ দেন। একই বছর ১৮ জুন তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত ২৬ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশের মাধ্যমে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি পদে দায়িত্ব পান মো. শফিকুল ইসলাম।
বরিশাল রেঞ্জে তার যোগদানের পর ৫ মাসেই পাল্টে যায় পুলিশের চিত্র। পুলিশ শাসক নয়, শোষক নয়; পুলিশ জনগণের সেবক। এই মন্ত্রে উজ্জীবিত এখন পুরো বরিশাল রেঞ্জের পুলিশের সকল সদস্য। এ কারণে হ্রাস পেয়েছে পুলিশ কর্তৃক মানুষের হয়রানি। শক্তি বা বল প্রয়োগে নয় বরং ভালোবাসার বার্তা দিয়ে সমাজ থেকে অপরাধের অন্ধকার দূরে করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ভালোবাসা আর সেবায় প্রত্যেকের হৃদয়ে উজ্জল আসন পেতেছেন ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম। তার দক্ষ তদারকিতে মাঠপর্যায়ে সদস্যদের মাঝেও পেশাদারিত্ব এসেছে। পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ লাঘবে ডিআইজির বিচক্ষণতা অনেকাংশেই প্রশংসার দাবি রাখে। মানুষের ভালোবাসা এবং কর্মকান্ডের মাঝে নিজেকে সারাক্ষণ বাচিয়ে রাখতে চান তিনি।
এছাড়া চাকুরিজীবনে তিনি কসোভো জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা স্টেট পুলিশ একাডেমি থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
সরকারি চাকরির পাশাপাশি ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম নিজ এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত আছেন। সময় পেলে ক্ষাণিকটা লেখালেখিও করেন তিনি। তার ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস ‘অন্ধকারের অন্তরালে’ ২০০৯ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৫ সালে তার রচিত দুটি নাটক ‘প্রেতাত্মার হাসি’ এবং ‘তাজমহল-পত্র নম্বর ৩১৩’ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে।