দায়িত্ব নিয়েই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বেশক’টি নতুন পরিকল্পনার মধ্যে লঙ্কানদের অনুশীলনে মিউজিক নিষিদ্ধ করেছেন হাথুরু। অবশ্য তার কাছেই সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড। তাই নিজের মতো করেই দলকে পরিচালনা করছেন হাথুরুসিংহে।
চলতি বছরটি সবচেয়ে খারাপ কেটেছে ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী শ্রীলঙ্কার জন্য। ১৩ টেস্টে মাত্র ৪টিতে জয় ও ৭টিতে হার, ২৯ ওয়ানডেতে মাত্র ৫টিতে জয় ও ২৩টি ম্যাচে হার এবং ১৫ টি-২০তে ৫টি জয় ও ১০টি ম্যাচে হারের লজ্জা পায় লংকানরা।
টেস্ট ফরম্যাটে ৫টি সিরিজের মধ্যে ২টি করে জয় ও হার তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। ওয়ানডে ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিসহ ছয়টি সিরিজ হারে তারা। বাংলাদেশের সাথে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে।
টি-২০ ফরম্যাটে বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও, পরবর্তীতে তিনটি সিরিজ হারে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের সাথে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ ড্র’র পর টি-২০ সিরিজও সমতায় শেষ করতে লঙ্কানরা। নিজ দেশের এমন জঘন্য পারফরমেন্স সইতে না পেরেই জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন হাথুরুসিংহে। দায়িত্ব নিয়েই দলকে ২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করার কাজে মনোযোগী হয়ে উঠেছেন হাথুরুসিংহে। আগামী মাসে বাংলাদেশ সফরকে সামনে রেখে ২৩ সদস্যের দল নিয়ে ইতোমধ্যে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন হাথুরু। এঁকেছেন পরিকল্পনার ছকও। এরমধ্যে দল থেকে মিউজিকও নিষিদ্ধ করে ফেলেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে হাথুরু বলেন, ‘যদি তারা মিউজিকের প্রতি আগ্রহী হয়, তবে তাদের বাসায় চলে যেতে হবে।’
বাংলাদেশের দায়িত্ব থেকে হঠাৎ অব্যাহতি দিয়ে শ্রীলঙ্কার দলের দায়িত্ব নেন ৪৯ বছর বয়সী হাথুরুসিংহে। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে আবারো ভালো পর্যায়ে তুলতেই এমন সিদ্ধান্ত তার। ২০১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই এগোচ্ছেন তিনি। তাই দলকে পরিচালনার জন্য পুরো নিয়ন্ত্রণও নিয়েছেন হাথুরু, ‘অনেক ক্ষেত্রে দল নির্বাচনের জন্য নিজের মতামত দিতে পারে না কোচরা। কিন্তু আমি এই ধারা পরিবর্তন করতে চাই। আমি দলের পুরো নিয়ন্ত্রণ চাই। দায়িত্ব নিয়েই সেরা দল ও একাদশ নির্বাচন করবো। শ্রীলঙ্কা বোর্ডের নির্বাচকরা আমার অনুরোধ রেখেছে এবং আমার উপর সকল দায়িত্ব দিয়েছে।’
বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে টাইগারদের বড় সাফল্য এনে দিয়েছেন হাথুরুসিংহে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটেও বড় বড় সাফল্য এনে দিতে মরিয়া হাথুরু। এজন্য প্রয়োজন হলে লংকান ক্রিকেটের সাবেক খেলোয়াড়দের সহযোগিতা নিবেন বলে জানান হাথুরু, ‘দল ও আমার প্রয়োজনে সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনে-মুরালিধরনের সহযোগিতা চাই। আশা করি তাদের সহযোগিতা পাবো। তাদের অভিজ্ঞতা ও উপদেশগুলো দলের প্রয়োজনে প্রয়োগ করতে চাই।’
শুধুমাত্র সাবেক খেলোয়াড়দেরই নয়, অস্ট্রেলিয়ার মনোবিদ ডা. ফিল জন্সিকেও কাজে লাগাতে চান হাথুরুসিংহে। যার সাথে হাথুরুর প্রথম পরিচয় হয় অস্ট্রেলিয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলস দলে। এরপর নিউ সাউথ ওয়েলস ও বাংলাদেশের হয়ে এক সাথে কাজ করেছেন হাথুরু ও জন্সি। তিনি বলেন, ‘আমি চাইবো শ্রীলঙ্কার দলের খেলোয়াড়দের সাথে তিনি কাজ করুক এবং আমাদের সহায়তা করুক।’ আগামী ৩ জানুয়ারি দল ও হাথুরুর সাথে আলোচনা করার কথা রয়েছে এই ক্রীড়া মনোবিদের। বাসস।